দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিই অর্থনীতির গতি ফেরাবে

জাগো নিউজ ২৪ ড. হারুন রশীদ প্রকাশিত: ২১ জুন ২০২৫, ১৩:৩৭

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত হচ্ছে জনশক্তি রপ্তানির খাত। দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তারা তাদের শ্রমলব্ধ অর্থ (রেমিট্যান্স) দেশে পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করছে। বলতে গেলে জনশক্তি রপ্তানি খাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। এ অবস্থায় বিদেশে নিত্যনতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করে ব্যাপকহারে আরও জনশক্তি রপ্তানির পথ উন্মুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির পথ সুগম করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।


সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই বাংলাদেশের শ্রমবাজার সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত। সেখানে চিকিৎসক এবং নার্সের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সেখানে ডাক্তার ও নার্স পাঠাতে পারছে না বাংলাদেশ। প্রবাসে যে সব শ্রমিক কাজ করছে তাদের ৯৮ শতাংশগই অদক্ষ। বর্তমানে বছরে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাচ্ছে সরকার জনশক্তি রপ্তানি খাত থেকে। এই অর্থ কয়েকগুণ করা সম্ভব যদি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা যায়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের ডাক্তার এবং নার্সের যে চাহিদা রয়েছে সে চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ থেকে ডাক্তার ও নার্স পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারলে জনশক্তি রপ্তানির আয় সহজেই বাড়ানো যায়।


বিদেশের বাজারটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। যে সব জনশক্তি রপ্তানি করে তারা শুধু দক্ষ জনশক্তি তৈরিই করে না তাদের কীভাবে বিদেশে পাঠানো যায় সে ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু আমাদের দেশে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ ব্যাপারে তেমন কোনো তৎপরতা নেই। এ কারণে দক্ষ জনশক্তির শ্রমবাজার প্রায় হারাতে বসেছে বাংলাদেশ।



বর্তমানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কাতার, ওমান, কুয়েত, ইরাক ও লিবিয়ায় ডাক্তার-নার্সদের কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিককালে সৌদি সরকার সে দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে ব্যাপক বিনিয়োগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করছে। ফলে চিকিৎসক-নার্স ও অন্যান্য দক্ষ জনশক্তির ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, ওমান, লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশ ডাক্তার-নার্স নেওয়ার জন্য ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, নেপালের মতো দেশের দিকে ঝুঁকছে। অথচ এক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হলে বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় এই দক্ষ জনশক্তির বাজার ধরতে পারতো।


মধ্যপ্রাচ্যে দক্ষ জনশক্তির যে বাজার সৃষ্টি হয়েছে সে সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য অবশ্যই তৎপরতা চালাতে হবে। এতে একদিকে বিদেশে দেশের ডাক্তার ও নার্সদের কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও বাড়বে। আর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন যত বাড়বে দেশের জন্য তা ততই মঙ্গল। সরকার দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির জন্য সারাদেশে ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া বর্তমানে দেশে ৩৭টি সরকারি ও ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এসব মেডিকেল কলেজ থেকে বছরে ৫ হাজার ডাক্তার বের হচ্ছে। পাশাপাশি দেশে প্রায় ১০ হাজার নার্স বেকার। এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার-নার্সদের কর্মসংস্থানে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।


অন্যদিকে মালয়েশিয়ায় রয়েছে বাংলাদেশের একটি বড় শ্রমবাজার। এই বাজার যাতে স্থায়ী বাজারে পরিণত হয় এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে কাজ করে যেতে হবে। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসায় কর্মী নেওয়া শুরু করলে বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বেসরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশি টাকা নেওয়া, দালাল কর্তৃক প্রতারিত হওয়া, মালয়েশিয়ার আউটসোর্সিং কোম্পানি কর্তৃক প্রতারণা- চুক্তি অনুযায়ী যথাযথভাবে কাজ না দেওয়া ইত্যকার নানান অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় চার বছর আগে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও