
দায় ও ঝুঁকির পাহাড়: একীভূত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক নিয়ে পুরোনো ভীতি
পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, সোশ্যাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংক একীভূত করার সরকারি ঘোষণার পরই আর্থিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ৯২ লাখ গ্রাহক ও ১৫ হাজার কর্মীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক, সন্দেহ এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা। গ্রাহকদের রক্ষিত টাকা নিরাপদ থাকবে কি না, কর্মরতদের চাকরি টিকবে কি না—এমন আতঙ্ক এখন ব্যাংকপাড়ায়। ইতিমধ্যে আমানতকারীরা সুযোগ পেলেই টাকা তুলে নিচ্ছেন, কেউ নগদে রাখছেন, কেউ ঝুঁকি কম ভেবে ইসলামী ব্যাংক পিএলসিসহ অন্যান্য শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বরের মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের মালিকানা রাষ্ট্রের হাতে গেলে বর্তমান সব এমডির চুক্তি বাতিল হবে; বাছাই করে একজনকে দায়িত্ব দিলে অবশিষ্ট উঁচু পদগুলো নির্বিচার খালি হতে পারে। এ অবস্থায় ব্যাংকগুলোয় কর্মরতদের ভবিষ্যৎ কোথায়, তার কোনো স্পষ্ট নকশা নেই।
এদিকে গত আগস্ট থেকে ২০ মে পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক পিএলসিতে ২১ লাখ নতুন হিসাব খুলে জমা পড়েছে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা; একই সময়ে একীভূত তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল টাকা হাওয়া। ইউনিয়ন ব্যাংকের একজন শাখা কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘নতুন গ্রাহক আনতে না পারলে চাকরি যাবে, এমন হুমকি প্রতিদিন শুনছি। এই বয়সে চাকরি হারালে সামনে অন্ধকার।’ গ্রাহকের ভোগান্তির ছবি আরও নির্মম। ইউনিয়ন ব্যাংকের আমানতকারী নাসিমা আক্তার মাত্র ৩ লাখ টাকা তুলতে আট মাস ধরে ঘুরছেন। এখন ব্যাংক বলছে, আর অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়।