You have reached your daily news limit

Please log in to continue


একজন কবি ও তাঁর কৃষি ভাবনা

সর্বত্র এবং সর্বদা সাধারণ মনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১-১৯৪১) পরিচয় একজন কবি হিসাবে- তাইতো তিনি কবিগুরু। সাহিত্য এবং সঙ্গীতের ক্ষেত্রে তাঁর অনন্য অবদানের কথা সর্বজনস্বীকৃত। তবে খুব বিশেষ বোদ্ধা শ্রেণি ছাড়া কৃষি তথা পল্লী উন্নয়ন নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে অন্য কারও তেমন ধারণা আছে বলে মনে হয় না। কবিগুরু যে একজন কৃষি বিজ্ঞানী তথা কৃষিবিদ ছিলেন সে কথাটা আমরা ক’জন জানি ? ১৮৮০ সালে অল্প বয়সে শিলাইদহ এবং পতিসর ভূসম্পত্তি দেখভাল করার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কৃষি ও কৃষিতে নিযুক্ত জনগোষ্ঠী তাঁর তীক্ষ্ণ নজর কাড়তে শুরু করে। কবি বলতেন, জমিদারি তাঁকে মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড় পরিচয় ঘটিয়েছে। কৃষক তথা কৃষি উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ জোর দিয়েছিলেন মূলত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কৃষি ঋণ ও সমবায় সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে। কৃষি নিয়ে তার প্রণিধানযোগ্য মন্তব্যটি হচ্ছে, গ্রামের মানুষ উন্নত ভদ্রলোক না হয়ে উন্নত চাষী হবে এবং জোর দিয়েছেন কৃষকের আত্মসম্মান ও আত্মশক্তির উপর :

আমাদের বাঁচিবার উপায় আমাদের নিজের শক্তিকে সর্বতোভাবে জাগ্রত করা। আমরা যে আমাদের পূর্ব-পুরুষের সম্পত্তি বসিয়া বসিয়া ফুঁকিতেছি, ইহাই আমাদের গৌরব নহে; আমরা সেই ঐশ্বর্য বিস্তার করিতেছি,ইহাই যখন সমাজের সর্বত্র আমরা উপলব্ধি করিব তখনই নিজের প্রতি যথার্থ সঞ্জাত হইয়া আমাদের মোহ ছুটিতে থাকিবে (‘স্বদেশী সমাজ’)।

আবার এটাও ঠিক যে পরিবর্তনশীল বিশ্বে সবকিছুই বদলায়। সেই গ্রাম যেমন নেই, তেমন নেই সেই কৃষি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পোস্টমাস্টার’ গল্পের উলাপুর গ্রামটি নিশ্চয় আগের মতো অতটা অনুন্নত নেই। বীরভূম জেলার গ্রামগুলোতে এখন প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বাজারমুখী কৃষি চলছে অথচ খরার জন্য একসময় এসব জায়গায় কোনো ফসল হতোনা। তেমনি ঘটেছে পাতিসর, শাহজাদপুর আর শিলাইদহে। কৃষি আর অ-কৃষিজ কর্মকাণ্ডের মিথস্ক্রিয়া, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আধুনিক চাষাবাদ স¤প্রসারণের মন্ত্রে দীক্ষিত গ্রাম ও কৃষির চেহারা আজ অনেকটাই যেন পাল্টে গেছে। গ্রামগুলোতে সাক্ষরতা বৃদ্ধি পেয়েছে, দারিদ্র্য কমেছে- এ সবই যেন কবিগুরুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে পদক্ষেপ।

তাই বলতে দ্বিধা নেই যে, বিশ্ব কবি নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজ থেকে বহুকাল পূর্বে কৃষি ও কৃষক নিয়ে যা ভেবেছেন বর্তমানের বিশ্ব বরণ্যে কৃষি অর্থনীতিবিদের কাছে তা রীতিমতো বিস্ময় জাগায়। কৃষি উন্নয়নকল্পে অর্থনীতিবিদ আজ যা ভাবছেন রবীন্দ্রনাথ তা ভেবেছেন প্রায় এক শতাব্দী আগে। যেমন ১৯০৮ সালে পুত্র রথীন্দ্রনাথকে (যাঁকে কৃষি সম্পর্কিত জ্ঞান লাভের জন্য ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল) লেখা এক চিঠিতে কবি লিখেছিলেন :

অনুগ্রহ করে ওদের বলো বসতভিটা ও ক্ষেতের সীমানায় যেখানে সম্ভব, আনারস, কলা, খেজুর এবং অন্যান্য ফলের গাছ লাগাতে। আনারসের পাতা থেকে খুব ভালো এবং শক্ত আঁশ বের করা যায়। এই ফলটা আবার খুব সহজেই বাজারজাত করা যায়। ঝোপঝাড়ের বেড়া হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং শেকড় থেকে কীভাবে খাদ্য উপাদান বের করা যায় সে সম্পর্কে কৃষককে জ্ঞান দেয়া দরকার। যদি তাদেরকে গোল আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করা যায় সেটা হবে খুব লাভজনক। অফিসরুমে আমেরিকান ভুট্টা বীজ রক্ষিত আছে; দেখো এগুলো বোনা যায় কিনা।

চিঠিতে লেখা উপরিউক্ত বক্তব্য থেকে পাঠক নিশ্চয় কৃষি তথা কৃষকের উন্নয়নের লক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্তর্দৃষ্টি এবং উপদেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারছেন। এমতাবস্থায় আমাদের এই মহান কবিকে যদি একজন কৃষিবিদ- এমনকি কৃষক হিসাবেও কল্পনা করা হয় তা হলে কি অন্যায় করা হবে? নিশ্চয় না। একজন প্রকৃত চাষী ফসল বিন্যাসে সর্বদা পরিবর্তন আনতে আগ্রহী থাকেন এবং এই পরিবর্তনে তাঁর মাথায় থাকে মূল্য সংযোজনকারী নতুন ফসলের কথা - যেমনটি ভেবেছেন কবিগুরু। যদি বাজারে চাহিদা থাকে এবং ফসল লাভজনক হয়, তখন সেগুলো উৎপাদনে তাদের আগ্রহ থাকে খুব বেশি। রবীন্দ্রনাথ মনে করতেন, সনাতনী ফসলের জায়গায় আসতে হবে আধুনিক ফসল এবং কী করে আধুনিক ফসল পরিচর্যা ও পরিগ্রহণ করতে হয় সে সম্পর্কে জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ থাকা প্রয়োজন। অর্থাৎ তিনি মনে করতেন যে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার অত্যন্ত জরুরি। ১৯১৬ সালের মার্চ মাসে তিনি ‘পল্লী প্রকৃতিতে’ লিখেছেন :

এই হচ্ছে আমাদের গ্রামের মাটি, আমাদের সেবিকা যার কোলে আমাদের দেশ প্রতিদিন জন্ম গ্রহণ করে। আমাদের শিক্ষিতজনের মন-মানসিকতা এই মাটি ছেড়ে সচেতন অভিজাত ধারণার নভোমণ্ডলে অবস্থান নিয়েছে। অঝোরে বৃষ্টিতে এই মাটির সাথে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক পূর্ণতা পাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন