
বইয়ের সঙ্গে ‘ব্লাইন্ড ডেট’, চায়ের সঙ্গে সফর
নাসিরুদ্দীন হোজ্জার গালগল্প শুনে বড় হয়েছি। টার্কিশ ফোকটেলস নামে একটা বই পড়ে জানলাম, ভদ্রলোকের জন্ম তুর্কির লোককথা থেকে। জেনে বিস্ময়ের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দও হলো। যাক বাবা, যে শহর ঘুরতে যাচ্ছি, সেখানে অন্তত একজন মানুষ তো আমার চেনা!
তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে গিয়েছিলাম গত মে মাসে। প্রাচীন এই শহরকে নানাজন নানাভাবে দেখেছে, ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা মিলবে অন্তর্জালে। আগেই ইশতেহার দিয়ে নিচ্ছি যে হাগিয়া সোফিয়া বা গালাতা মিনার নিয়ে জানতে আগ্রহী ব্যক্তিরা এ লেখা পড়ে নিরাশ হবেন। তবে আপনার যদি একটা বোহেমিয়ান হৃদয় থাকে, ভ্রমণে গেলে দুই পায়ের ভরসায় অলিগলি ঘুরে দেখার তীব্র ইচ্ছাটা দুর্দমনীয় হয়ে থাকে, তবে আপনাকে থামাব না। চলুন ঘুরে আসি বসফরাসের তীরঘেঁষা হাজার বছরের পুরোনো লোকালয় থেকে।
কারাকয় নামের এলাকাটা যেদিন ঘুরলাম, খুব অবাক হয়েছিলাম দুই কদম পরপরই ‘কিতাবেভি’ বা ‘কিতাবালয়’-এর দেখা পেয়ে। এত বইয়ের দোকান! এত এত বই! উঁহু, বিক্রেতা মোটেও মাছি মারছেন না। তরুণ-তরুণীর সমাগম তো আছেই, শিশুদের বইয়ের অংশটাতে মা-বাবার হাত ধরে শিশুরাও বইয়ের পাতা উল্টে দেখছে। ‘ব্লাইন্ড ডেট’ নামের চমৎকার একটি ধারণার সঙ্গেও পরিচিত হলাম। দোকানের মূল দরজার পাশেই একটি কাঠের তাকে বেশ কিছু বই রাখা। বইগুলো মোড়কে ঢাকা, যেন বইয়ের নাম বা পরিচয় কিছুই জানা না যায়। মোড়কের ওপর খুবই সংক্ষেপে বইটা সম্পর্কে অল্পস্বল্প লেখা, সেই সঙ্গে বইয়ের দামটা। এই অল্প কথায় যদি আপনি ‘পটে’ যান এবং আরও জানার ইচ্ছা তৈরি হয়, তাক থেকে তুলে নিন খয়েরি মোড়কে ঢাকা রহস্যময়ী বইটি। বইয়ের সঙ্গেই জমে উঠবে আপনার ‘ব্লাইন্ড ডেট’।