
ঢাকায় ‘সিঙ্কহোল’ নিয়ে আলোচনা: বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন
২৭ মে; মঙ্গলবার। বিকেল ৪টার কাছাকাছি সময়। রাজধানী ঢাকার সাত মসজিদ রোডের শংকর পদচারী সেতু সংলগ্ন সড়কে হঠাৎ একটি গর্ত তৈরি হল। গর্তটির আকার শুরুতে ছোট ছিল। অল্প সময়ের ভেতর এর আকার বড় হলে তা পথচলতি মানুষের নজরে আসে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। 'রহস্যময়' এ ঘটনায় তৈরি হয় আতঙ্ক।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই বিশাল গর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এটিকে দাবি করেন 'সিঙ্কহোল' অর্থাৎ দানব গর্ত কিংবা বিশালাকায় গর্ত হিসেবে। কারণ হিসেবে হাজির করেন নানান ব্যাখ্যা।
পরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) উদ্যোগে বালু ফেলে জায়গাটি ভরাট করার পর রাত ২টা থেকে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রশ্ন হলো—সাত মসজিদ রোডে তৈরি হওয়া ওই গর্তটি কি আসলেই কোনো সিঙ্কহোল? এটা কী কী কারণে তৈরি হতে পারে? ঢাকার মাটির যে গঠন, তাতে এখানেও কি প্রাকৃতিকভাবে সিঙ্কহোল তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে? এর পেছনের মনুষ্যসৃষ্ট কারণগুলোও বা কি কি?
বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুব্রত কুমার সাহা, নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান এবং ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম-এর সঙ্গে।
সিঙ্কহোল কী?
এই বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলীদের অভিমত, সাধারণত সিঙ্কহোল বলতে ভূ-পৃষ্ঠে হঠাৎ তৈরি হওয়া বিশালাকায় কোনো গর্তকেই বোঝায়। এটি তৈরি হওয়ার বিষয়টি বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এটি প্রধানত চুনাপাথর, জিপসাম বা লবণ শিলার মতো সহজে দ্রবণীয় শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চলগুলোতে ঘটে। যখন এই শিলাগুলো ভূগর্ভস্থ পানির দ্বারা দ্রবীভূত হয়, তখন মাটির নিচে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। এভাবে যখন মাটির উপরিভাগের ওজন বেশি হয়ে যায়, তখন তা ধসে পড়ে বড় গর্ত তৈরি করে।
সাত মসজিদ রোডে তৈরি হওয়া গর্তের কারণ কী?
এ ব্যাপারে ডিএসসিসির অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের বক্তব্য হলো, 'ডিপিডিসি (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড) থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড একটা লাইন হরাইজেন্টাল ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছিল। তখন ঢাকা ওয়াসার সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের যে পানির লাইন, সেটা লিক হয়েছিল। ওখান থেকে আস্তে আস্তে ওয়াশআউট হয়ে বালু সরে যায়। যে কারণে পরবর্তীতে গর্তটি তৈরি হয়।'