
২১ লাখ মানুষের জন্য চিকিৎসক ১০ জন
সাতটি উপজেলা নিয়ে সীমান্তবর্তী জেলা মৌলভীবাজার। এ জেলায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। এই বিশালসংখ্যক মানুষের জন্য সরকারি চিকিৎসাসেবা পাওয়া এখন সোনার হরিণের মতো। জেলার সাতটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমপক্ষে ১০০ চিকিৎসা কর্মকর্তা (মেডিকেল অফিসার) থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১০ জন। অর্থাৎ প্রায় প্রতি ২ লাখ ১০ হাজার মানুষের জন্য একজন চিকিৎসক রয়েছেন। তা-ও আবার সাত উপজেলা কমপ্লেক্সের পাঁচটিই চলছে মাত্র একজন করে চিকিৎসক দিয়ে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গল ও রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বিভিন্ন সময়ে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ হাসপাতালে ৩১ শয্যারও জনবল নেই। হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসক-সংকটের কারণে জরুরি বিভাগ চালু রাখাই দুরূহ হয়ে পড়েছে। শ্রীমঙ্গল ও বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়া বাকি হাসপাতালগুলোয় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা এখন বন্ধ।
সরেজমিনে কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৪০০ রোগী চিকিৎসাসেবা নেয়। চিকিৎসক-সংকটে কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ী ও কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি ও শিশু বিভাগে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। বেশির ভাগ রোগীকেই ছুটতে হয় জেলা শহরের হাসপাতালে। বিশেষ করে বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়া থেকে রোগীদের ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে যেতে হয়। এ ছাড়া অধিকাংশ হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি, ওটি (অপারেশন থিয়েটার), ডেন্টাল চেয়ার, অ্যানেসথেসিয়া মেশিন ও অ্যাম্বুলেন্স অচল পড়ে আছে। কোথাও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সচল থাকলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে সেবা বন্ধ।
হালনাগাদ তথ্যমতে, জেলায় চিকিৎসা কর্মকর্তা ১৪ জনের জায়গায় শূন্যপদ রয়েছে ৯টি। মেডিকেল অফিসার/সহকারী সার্জন ৭ জনের জায়গায় শূন্য পদ ৬টি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসারের পাঁচটি পদের চারটিই শূন্য। জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদে ৩৯ জনের জায়গায় শূন্য ১৮টি। স্বাস্থ্য পরিদর্শক থাকার কথা ২০ জন, আছেন ছয়জন। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ৪১টি পদের ১৮টি শূন্য। সিনিয়র স্টাফ নার্স থাকার কথা ১৬২ জন। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ৫৩টি।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- স্বাস্থ্য সেবা
- চিকিৎসক সংকট