উটকো যাত্রীর ভারে ইন্টেরিম ট্রেন

জাগো নিউজ ২৪ মোস্তফা কামাল প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫, ১২:৫৩

কী হচ্ছে, দেশ কোনদিকে যাচ্ছে-এমন নানা প্রশ্নের বাঁকেও অযাচিত নানা ঘটনা। এসব ঘটনায় স্টেশন ছাড়াও যেখানে-সেখানে ইন্টেরিম ট্রেন ঠেসে যাচ্ছে উটকো যাত্রীতে। যে ট্রেনের লাস্ট স্টপেজ নির্বাচন শেষে একটি সংসদ ও নতুন সরকার। সেখানে ঘাটে-আঘাটে চেইন টেনে ট্রেন থামানো অপচেষ্টা। বাজেট সামনে রেখে জট পেকেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরে। যে সময়টায় এ প্রতিষ্ঠানটির থাকে সর্বোচ্চ কর্মব্যস্ততা। বড্ড জরুরি সময়ে গোল বেঁধেছে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে। কর্মবিরতীতে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা। নার্স-হাসপাতাল টেকনিসিয়ানসহ আরো অনেকে কাজ ছেড়ে হল্লা করছে রাজপথে। এসবের একটিও অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয় হওয়ার কারণ ছিল না।


রাজস্ব নিয়ে, এনবিআর নিয়ে কদিনের গুমোট মেঘ এরইমধ্যে অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে। ড. ইউনুস সরকার বিষয়টি সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করে আপাতত অধ্যাদেশের কার্যকারিতা স্থগিতাদেশ করে এনবিআরকে অক্ষুন্ন রেখে সংস্কার প্রস্তাবকে কিভাবে যুগোপযোগী করা যায় তার দিকনির্দেশনা দিয়েছে। ততক্ষণে উত্তেজনা, কাজে গাফিলতি যা হবার হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি রাষ্ট্রের মূল বাজেট আদায় করে মে জুন মাসে। এনবিআর কর্মকর্তারা এসময় দম ফেলার সুযোগ পান না। এবার দেখা গেল উল্টোচিত্র। ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। বন্দরে কন্টেইনার জট। সামনে কতোদিনে এ ক্ষত সারবে, কেউ জানে না।


সচিবালয়কে ঘিরে সরকারি-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন দেশের গোটা প্রশাসনের জন্যই লাল সংকেতের মতো। সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ ২০২৫’-কে নিবর্তনমূলক দাবি করে তা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভের তেজ ছড়িয়ে চলছে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। সোমবার সচিবালয়ের কয়েকটি প্রবেশমুখও বন্ধ করে দেয় তারা। মাত্র ক’দিন আগে কোনো মতে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাস্তা থেকে সরানো হয়েছে জগন্নাথের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। সাত কলেজ এখনো চক্করে আছে। ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজ টি টোয়েন্টি জমছে। তীতুমীর কলেজ মাঠ ছেড়েও ছাড়ছে না। আনসারদের থামানো গেলেও ফুঁসছে ভেতরে-ভেতরে। চব্বিশের স্পিরিটে কেউ এখনো হাসপাতালে কাঁতরাচ্ছে। ক্ষমতার স্বপ্নও দেখছে কেউ কেউ। আর এ সময়ে এসে নূন্যতম চিকিৎসা না পেয়ে বিষপানে জুলাই গণ-আন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা।


ইউনূস সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়-এমন একটা নমুনায় তারা ব্যথিত। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভিন্ন দলের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, শুধু সরকার নয়, রাজনৈতিক দলগুলোরও এই বিষয়ে ভূমিকা হতাশাজনক। জুলাই - আগষ্ট আন্দোলন থেকে কে কী পেলেন, এ ভাবনা কাহিল করে তুলেছে তাদের। আর রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতার বসতবাড়ি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আবার বৈঠকের সুবাদে আপাতত একটা স্বস্তিভাব এলেও তা কতোটা এগোবে-হলফ করে বলা যাচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখনই পদত্যাগ করছেন না, সেটা নিশ্চিত হলেও পরাজিত শক্তির ইন্ধনে এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে তুললে তার সব কারণ জনসমক্ষে উত্থাপন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, নানা ধরনের অযৌক্তিক দাবিদাওয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও এখতিয়ারবহির্ভূত বক্তব্য এবং কর্মসূচি দিয়ে যেভাবে স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করে তোলা হচ্ছে এবং জনমনে সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। দেশকে স্থিতিশীল রাখতে, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কারকাজ এগিয়ে নিতে এবং চিরতরে এ দেশে স্বৈরাচারের আগমন প্রতিহত করতে বৃহত্তর ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।


দেশ এবং শাসনতান্ত্রিক এ আবহ মোটেই কাম্য ছিল না। অংশীজনরা যেন ভুলেই গেছেন কী পরিস্থিতিতিতে দেশে চরম নৈরাজ্যের মধ্যে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ড. ইউনূস। নিজের জীবনকে গান পয়েন্টে রেখে কিভাবে ‘নো ফায়ার’ ঘোষণা দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ্জামান। সেই সেনাপ্রধানকেই ক’দিন পর পর দিতে হয় সতর্ক বার্তা। বলতে হয় জাতীয় ঐক্য রক্ষা করতে। নইলে কী পরিণতি হবে, তাও বোঝাতে হয়। সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তো এই ক’দিন আগেও লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ারে জানিয়ে দিয়েছিলেন, মিলেমিশে না চললে সামনে খারাপি আছে। তখন কিন্তু তাকে দোষারোপ করা যাবে না। তখন কারো কারো কাছে তার ওই সতর্কবার্তা তিতা লেগেছে। এখন বাস্তবতা বুঝেও নখরামি। পরস্পরকে সহ্য না করার বিমারি। সেনাপ্রধানের সাথে প্রধান উপদেষ্টার বিরোধ রচনা ও তার বিস্তার ঘটানো। বিশ্বসম্প্রদায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন আদায় করে ধ্বংসপ্রায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার পথে এখন পদে পদে ফেতনা পাকানো। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির রেখে যাওয়া ভঙ্গুর বাংলাদেশ এখন একটি কাঠামোতে দণ্ডায়মান। নির্বাচন, সংস্কার, বিচারসহ নিয়মিত সব কাজই করতে হচ্ছে এ সরকারকে। জরুরি কোনো কাজই ফেলে রাখা যাচ্ছে না। সেখানে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি ও অসহযোগিতা, প্রায়ই সড়ক আটকে আন্দোলনের নামে জিম্মি করে যৌক্তিক-অযৌক্তি দাবি আদায়ের চেষ্টা, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া ড. ইউনূস পর্যায়ের কাউকে ব্যথিত করা অস্বাভাবিক নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও