You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি

ড. এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক। এর আগে ছিলেন ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের ডেপুটি ভাইস চ্যান্সেলর। এছাড়া তিনি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপকের পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত ১২ সদস্যের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটের অগ্রাধিকার নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেন বণিক বার্তায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। সেখানে বেশকিছু অগ্রাধিকার থাকা দরকার বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে বলা হচ্ছে। আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন?

ড. এ কে এনামুল হক: কিছু ব্যয়বহুল প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া উচিত, যদি না সেখানে রাজনৈতিক ঝুঁকি থাকে। যেগুলো যুক্তিসংগত প্রকল্প সেগুলো রাখা যেতে পারে। আবার কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প আছে যেগুলোয় ব্যয় করা অযৌক্তিক। সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক খাতে উন্নয়ন আশা করছে, তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। আমাদের দেশে মূলত খরচ বাড়ানো হয়, কিন্তু এর মানে সর্বদা সঠিক উন্নয়ন নয়। আমাদের এখানে বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিজ (অবকাঠামো) তৈরিতে খরচ বাড়ানো হয় কিন্তু সার্ভিস (সেবা) বাড়াতে নয়। দেখা গেছে, আমরা স্কুল বানাচ্ছি কিন্তু সেখানে শিক্ষক দিচ্ছি না, শিক্ষকদের আকর্ষণীয় বেতনাদি দিচ্ছি না।

আমাদের এখানে খরচ বাড়ানো মানে কনস্ট্রাকশন (নির্মাণ) কাজ। এটা থেকে বেরিয়ে আসা ভালো কৌশল হতে পারে বলে মনে করি। সার্ভিস বা পরিষেবার মান উন্নতির দিকে মনোযোগ দিতে হবে আমাদের। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের দিকে তাকান। স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু ডাক্তার সংকট এখনো রয়ে গেছে। এখন স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক লাগবে, নার্স লাগবে, দক্ষ টেকনিশিয়ান লাগবে। খরচ বাড়াতে গেলে সেদিকে জোর দিতে হবে। অনেক ডাক্তার পড়ে আছে যাদের কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট (নিয়োগ) হয়নি। মাঝে মাঝে সংবাদমাধ্যমে দেখি, অনেক হাসপাতালে দামি দামি যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে কিন্তু তা পরিচালনার জন্য অপারেটর নেই। দক্ষ অপারেটর ছাড়া এসব দামি দামি জিনিস হাসপাতালে পড়ে থাকা জাতীয় সম্পদের অপচয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটিতে কাজ করার সময় দেখেছি সিলেটে ২০০ শয্যার হাসপাতাল রেডি কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়া হয়নি।

আমি যদি মনে করি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য একটি জরুরি পরিষেবা, সেখানে স্রেফ কনস্ট্রাকশন বা নির্মাণের চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে পরিষেবা নিশ্চিতে ব্যয় বাড়ানো উচিত।

বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকার এমন গঠনমূলক চিন্তা করবে এমনটা আশা করছি। এছাড়া সরকার দুর্নীতি দূর করতে চাইছে, যা বাজেট ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের অর্থনীতির অন্যতম সমস্যা হলো ঋণ। আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। সুদের হারও বাড়ানো হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলতে পারে। সার্বিকভাবে সরকারি বাজেট পরিকল্পনা, উন্নয়ন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন এবং কর্মসংস্থান তৈরির ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন।

আমাদের বেকারত্বের হার প্রকট। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কেমন ভূমিকা রাখতে পারে এ বাজেট?

ড. এ কে এনামুল হক: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমনিতেই সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমাদের বাজেট মোট জিডিপির ১৪-১৬ শতাংশের মতো। সরকার বাজেট সংকোচনের কথা বলছে, তাহলে তো আরো কমে যাবে। মোট বাজেটের আবার ১০ শতাংশের মতো চলে যায় সরকারি কর্মচারীদের বেতনাদিতে। বাজেটের মাত্র ৪-৫ শতাংশ দিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা কঠিন। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সরকারের জন্য দুরূহ। সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এজন্য দরকার বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধি। সেখানে যদি বিনিয়োগ না বাড়ে তাহলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগ দেখছি না।

দেশীয় বিনিয়োগকারীদের অনেকেই বলছেন, তারা নতুন বিনিয়োগ করছেন না। দেশীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ না করলে বিদেশীরাও বিনিয়োগ করবে না। বিনিয়োগ নিয়ে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের এ অনিশ্চয়তা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে?

ড. এ কে এনামুল হক: অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন। যতক্ষণ পর্যন্ত ভবিষ্যৎ পথরেখা স্পষ্ট না হবে ততদিন এ অনিশ্চয়তা থাকবে। কবে নির্বাচন হবে, সরকার কতদিন থাকবে এ বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের কাছে স্পষ্ট না হলে তারা বিনিয়োগ করতে চাইবে না।

আমরা তো এখনো বলতে পারছি না, দেশে দুর্নীতি নেই। দুর্নীতি থাকলে কোনো বিনিয়োগকারী দুই সরকারকে অর্থ দিতে রাজি হবে না। আমরা জানি, এ সরকারের উপদেষ্টারা ঘুস খাচ্ছেন না। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি রয়েই গেছে। সম্প্রতি জ্বালানি উপদেষ্টা পিজিসিবির একটি বিষয় সামনে এনেছেন। দেখা গেছে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলেও ট্রান্সমিশন লাইন বানানো হয়নি। বিদ্যুৎ উৎপাদন করে লাভ কি যদি তার ট্রান্সমিশন লাইনই না থাকে? আমি যদি এক হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করি তাহলে কি আমার এক হাজার মেগাওয়াট সঞ্চালন লাইন লাগবে না? এভাবে সরকারের বিভিন্ন কাজে যদি সমন্বয় না থাকে তাহলে প্রচুর অপচয় হবে। আবার যে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য তা করা হয়েছিল সেটাও আসবে না। পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। দুঃখজনক হলো আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি কিন্তু সেখানেও সমন্বয় নেই। বিডার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’ হিসেবে কাজ করা। কিন্তু এটাও অনেকাংশে তার লক্ষ্য পূরণ করেনি। এসব ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন না এলে বিনিয়োগকারী না আসাটাই স্বাভাবিক।

এমন পরিস্থিতিতে কেবল পুরনো বিনিয়োগকারীরাই বিনিয়োগ করতে পারে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য। কিন্তু তারাও যদি নতুন করে বিনিয়োগ না করে থাকে সেটি হবে একটি চিন্তার বিষয়। বিগত সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীদের অনেকেই বর্তমানে বিনিয়োগ করবে না হয়তো। তবে বাকিরা যেন নতুন করে বিনিয়োগ করে সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। কিংবা তারা কেন বিনিয়োগ করছেন না সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ নিশ্চিত করতে পারলে বিনিয়োগ আসবে বলে আমার মনে হয়। দ্বিতীয়ত সময়ের পরিক্রমায় দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটলে বিনিয়োগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়বে। তবে যদি দুর্নীতি দূর করা যায় তাহলে দ্রুত বিনিয়োগের হার বাড়বে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন