
পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখছে বিএনপি
নানা ইস্যুতে দেশে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা। ধীরে ধীরে সংকট প্রকট হচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে খুব দ্রুততার সঙ্গে একের পর এক ঘটনা ঘটছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে তার পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে বলে মনে করছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচন, রাখাইনে মানবিক করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া, ছয় উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিসহ আরও কয়েকটি ইস্যুতে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজনের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করে দলটি। সিনিয়র নেতারা মনে করেন, এ ঘোলাটে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা। সেই রোডম্যাপ যত দ্রুত ঘোষণা করা হবে, তত দ্রুত ঘোলাটে পরিস্থিতি পরিষ্কার হবে বলে মনে করেন নেতারা।
এদিকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দুই দিন ধরে মিত্র রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলছে বিএনপি। এর মধ্যে কোনো কোনো দলের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকও করেছে দলটি। একটি সূত্র জানিয়েছে, দু-একদিনের মধ্যে মিত্রদের সঙ্গে একটি বৈঠক হতে পারে বিএনপির। মিত্র দলগুলো নিয়ে একটি কনভেনশন ডাকার জন্য ইতোমধ্যে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছে বেশ কয়েকটি দল, যা যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সেসব দল রাজপথে ছিল এবং প্রাসঙ্গিক আরও কয়েকটি দল নিয়ে এই কনভেনশন করার কথা বলা হয়েছে। যেখানে সম্মিলিতভাবে দলগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চাইবে। সূত্র আরও জানিয়েছে, চলমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে জামায়াতেরও আলাপ হয়েছে।
সূত্রমতে, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল বিএনপির। অজ্ঞাত কারণে সেই সাক্ষাৎ হয়নি। এরপরও কয়েকদফা সাক্ষাতের চেষ্টা করা হলেও প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ পায়নি। জানা যায়, সাক্ষাতে বিএনপির তরফ থেকে একটি লিখিত দেওয়ার কথা ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ওই সাক্ষাৎ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের অবস্থান তুলে ধরে দলটি। সেখানেও একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানায়। সূত্র আরও জানায়, জামায়াতে ইসলামীর তরফেও বারবার সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের জন্য প্রধান উপদেষ্টকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো অনুরোধেই তিনি সাড়া দেননি।