You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ক্ষুদ্র অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতায়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি

অর্থ শুধু একটি বিনিময় মাধ্যম নয়—এটি হলো সক্ষমতা ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের চাবিকাঠি। এটি জীবনমান উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে স্বাধীনতা এনে দেয়। যখন মানুষের হাতে অর্থ থাকে তখন তারা নিজেদের ও পরিবারের জন্য উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণে সক্রিয় হতে পারে। কিন্তু অর্থের অভাব মানুষের জীবনকে ঠেলে দেয় দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে।

১৯৭০-এর দশকে আর্থিক সেবা ছিল কেবল ধনী ও সচ্ছল উদ্যোক্তাদের জন্য সীমাবদ্ধ। যাদের সবচেয়ে বেশি সহায়তার প্রয়োজন ছিল—ক্ষুদ্র কৃষক, শ্রমজীবী ও গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী—তারা এ সেবার বাইরে থেকে যেত। ফলে তারা বাধ্য হতো উচ্চ সুদের মহাজনি ঋণের ওপর নির্ভর করতে। এ শোষণমূলক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতে পাই সাহিত্যেও—যেমন ‘দুই বিঘা জমি’-র সেই বিখ্যাত সংলাপ: ‘বাবু কহিলেন, “‍বুঝেছো উপেন, এ জমি লইবো কিনে”।’ এ প্রেক্ষাপটেই চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক নীরব বিপ্লবের সূচনা করেন। ১৯৭০-এর দশকের শেষ ভাগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন এক নতুন ধরনের আর্থিক ধারণা—ক্ষুদ্র অর্থায়ন। এর লক্ষ্য ছিল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক ক্ষমতায়নের পথ দেখানো।

ক্ষুদ্র অর্থায়নের উদ্ভব শুধু আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য নয়, বরং এটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, প্রান্তিক কৃষক এবং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার এক শক্তিশালী উপায় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মাইক্রোফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশনগুলো (এমএফআই) হয়ে উঠেছে সেই রূপান্তরকারী শক্তি, যারা প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে থাকা মানুষের আস্থা ও আশার প্রতীক।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৭২৪টি এমআরএ অনুমোদিত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারা ৪১ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন সদস্যকে আর্থিক ও সামাজিক সেবা প্রদান করছে, যাদের মধ্যে ৯০ দশমিক ৮২ শতাংশই নারী। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয়—ক্ষুদ্র অর্থায়ন এখন আর শুধু অর্থের গল্প নয়, এটি পরিবর্তনের, ক্ষমতায়নের এবং মর্যাদার একটি চলমান অধ্যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র অর্থায়ন খাতে প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার কর্মী সরাসরি নিয়োজিত রয়েছেন (সূত্র: বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ - বার্ষিক পরিসংখ্যান, ২০২৪)।

গ্রামের রোদে পোড়া মাঠ পেরিয়ে, শহরের অলিগলি ঘেঁষে ক্ষুদ্র অর্থায়নের কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রান্তে প্রান্তে। একজন নারী কৃষক যখন ফসলের বীজ কেনার জন্য প্রথম ঋণ নেয়, একজন গৃহিণী যখন হস্তশিল্প তৈরির যন্ত্রপাতি কেনে কিংবা একজন তরুণ যখন ছোট একটি দোকান খোলার স্বপ্ন দেখে—প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র অর্থায়ন হয়ে উঠেছে তাদের স্বপ্নের বাহন। বাংলাদেশে এমএফআইগুলো এখন শুধু ঋণ প্রদানকারী নয়, তারা হয়ে উঠেছেন সামাজিক পরিবর্তনের রূপকার। প্রতিটি শাখা অফিসে শোনা যায় নারী উদ্যোক্তাদের সাফল্যের গল্প, দেখা যায় কৃষকদের মুখে আত্মবিশ্বাসের হাসি।

ডিজিটাল প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিতে ক্ষুদ্র অর্থায়নও পেয়েছে নতুন গতি। একজন কৃষক, খামারি থেকে শুরু করে একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা—সবার জন্যই খুলে দিয়েছে আর্থিক সম্ভাবনার দরজা।

প্রতিদিন সকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যখন ক্ষুদ্র অর্থায়নের কর্মীরা তাদের ডায়েরি নিয়ে বের হন, তারা শুধু ঋণ বিতরণ করেন না, তারা বিতরণ করেন আত্মনির্ভরশীলতার বীজ। এ বীজ থেকে গজিয়ে ওঠা অসংখ্য সাফল্যের গল্পই প্রমাণ করে, ক্ষুদ্র অর্থায়ন কতটা গভীরভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র অর্থায়ন কার্যক্রম এ অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান উদাহরণ, যা ‘মিসিং মিডল’—ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের সেবাবহির্ভূত একটি শ্রেণী—কেউ সেবার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।

একসময় ক্ষুদ্র অর্থায়নের যে উদ্যোগগুলো শুরু হয়েছিল, সেগুলো আজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি বড় অবদানকারী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান কৃষক, তাঁতি এবং সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, ক্ষুদ্র অর্থায়ন তাদের সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবায়ন করার পথ দেখাচ্ছে। এর ফলে অর্থনীতিতে নতুন উদ্যোক্তাদের উত্থান ঘটেছে, পরিবারগুলো এখন উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চিত্রে ধীরে ধীরে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন