বিদেশি বিনিয়োগ, সমৃদ্ধ অর্থনীতি ও আসন্ন বাজেট

ঢাকা পোষ্ট অধ্যাপক ড. সুজিত কুমার দত্ত প্রকাশিত: ২০ মে ২০২৫, ০৯:১৭

আসন্ন বাজেট কেবল একটি আর্থিক দলিল নয়, এটি একটি জাতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার সুস্পষ্ট চিত্র। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই বাজেট আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এমন এক সময়ে প্রণীত হচ্ছে যখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার পথে দৃঢ় পদক্ষেপ ফেলেছি। এই অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি অপরিহার্য।


বাংলাদেশের অর্থনীতি কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। পোশাক শিল্প আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছে। তবে, একটি টেকসই ও বহুমুখী অর্থনীতির জন্য আমাদের অবশ্যই বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে।


বিদেশি বিনিয়োগ কেবল নতুন নতুন শিল্প স্থাপন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে না বরং উন্নত প্রযুক্তি, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ এবং পর্যটনের মতো সম্ভাবনাময় খাতগুলোয় বিদেশি বিনিয়োগের বিপুল সুযোগ রয়েছে।


এই খাতগুলোয় বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি, আমদানি নির্ভরতা কমাতে পারি এবং রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। আমাদের রয়েছে তরুণ ও উদ্যমী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, উর্বর কৃষি জমি, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান।


বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা রয়েছে। এই সম্পদগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আমরা কেবল বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণই করতে পারি না বরং টেকসই ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতেরও ভিত্তি স্থাপন করতে পারি। আসন্ন বাজেটে এমন কিছু নীতি ও প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন, যা এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে সহায়ক হবে।


প্রথমত, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল ও বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এমন দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিদ্যমান, আইনি কাঠামো সুস্পষ্ট ও প্রয়োগযোগ্য, এবং ব্যবসা পরিচালনার প্রক্রিয়া সহজ।


আসন্ন বাজেটে কর কাঠামোকে যৌক্তিকীকরণ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য এক জানালা সেবা (One-Stop Service) নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন। দীর্ঘমেয়াদি কর অবকাশ (Tax Holiday) এবং অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদনশীল খাত এবং প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা যেতে পারে।


বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (Special Economic Zones - SEZ) এবং রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (Export Processing Zones - EPZ) কার্যক্রম আরও গতিশীল ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা উচিত। তবে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক প্রণোদনা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।


একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ এবং নিরাপদে তাদের পুঁজি বিনিয়োগের সাহস জোগায়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল, অবরোধ, সহিংসতা এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা বিদেশি বিনিয়োগের প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও