‘পুকুরচুরি’র শিকার ঢাকার ৩১ পুকুর
সরকারি নথিতে রাজধানীর বাউনিয়ায় বড়সড় একটি পুকুর আছে। জমির দাগ নম্বর ধরে খুঁজতে গেলাম পুকুরটিকে। গিয়ে দেখা গেল, সেখানে গড়ে উঠেছে কয়েকটি টিনের ছাউনির ঘর ও একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এমনকি সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ও করা হয়েছে সরকারি পুকুরের জমিতে।
যেখানে পুকুর ছিল, তার কাছেই একটি বাড়িতে থাকেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, তিনি ওই এলাকায় বাস করেন চার দশকের বেশি সময় ধরে। পুকুরটি তিনি দেখেছেন। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা গোসল করতেন। মাছ ধরতেন। বছর ১০-১২ আগে পুকুরটি ভরাট করা শুরু হয়। কয়েক বছরের মধ্যে পুরো ভরাট করে স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
বাউনিয়ার পুকুরটি নিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুকুরের জমির অবৈধ দখলদারের সংখ্যা ১৯।
ঢাকা জেলা প্রশাসন ২০২৩ সালের নভেম্বরে ঢাকার পুকুরগুলো নিয়ে সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছে পাঠায়। এতে রাজধানীতে থাকা খাস ও ভিপি (অর্পিত সম্পত্তি) জমিতে ৫৮টি পুকুরের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়।
জেলা প্রশাসন রাজউককে চিঠিটি দিয়েছিল পুকুরগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার, পুনঃখনন, পাড় বাঁধাই ও হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করার জন্য, যাতে তা দখলমুক্ত থাকে এবং অগ্নিদুর্ঘটনার সময় পানির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদন, রাজউকের জরিপ ও প্রথম আলোর নিজস্ব অনুসন্ধান অনুযায়ী, ৫৮টির মধ্যে ৩১টি পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। এ যেন পুকুরচুরি! পুকুরচুরি বাগ্ধারাটির অর্থ বড় ধরনের চুরি। ঢাকার সেই পুরোনো পুকুরগুলো বড় ধরনের চুরিরই শিকার হয়েছে।