
বার্ড ফ্লু আক্রান্ত দেশ থেকে মুরগি আমদানি
বার্ড ফ্লু (এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক দিন বয়সের হাই-লাইন ব্রাউন জাতের মুরগির বাচ্চা আমদানির অনুমতি দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। অনুমতি দেওয়ার মাত্র আট দিনের মধ্যে তড়িঘড়ি মুরগির বাচ্চাগুলো দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। পোলট্রি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বার্ড ফ্লুর প্রকোপের কারণে যখন যুক্তরাষ্ট্রে কোটি কোটি মুরগি মেরে ফেলা হচ্ছে, তখন সেখান থেকে বাচ্চা আনলে দেশজুড়ে পোলট্রি খাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ২৭ এপ্রিল দেওয়া অনুমতিপত্রে আগামী ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে বিমানে করে ১০ হাজার ৯৬০টি মুরগির বাচ্চা আমদানির কথা বলা হয়েছে। বিমানবন্দর প্রাণিসম্পদ কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪ মে মুরগির বাচ্চাগুলো ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। এগুলো আমদানি করেছে পোলট্রি খাতের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস লিমিটেড। কোম্পানিটিকে মুরগির বাচ্চা আমদানির জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বার্ড ফ্লু-সংক্রান্ত যেসব শর্ত দিয়েছে দৃশ্যত তার অন্তত একটি (৭নং) লঙ্ঘন করা হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে ছিল, অনুমোদিত সব প্যারেন্ট/গ্র্যান্ড প্যারেন্ট স্টক (মুরগির বাচ্চা) বিমানযোগে আমদানি করতে হবে এবং বার্ড ফ্লু আক্রান্ত দেশের ট্রানজিট গ্রহণ করা যাবে না (শর্ত ৪) এবং রপ্তানিকারক দেশে এই সংক্রামক রোগ উল্লেখ করার মতো মাত্রায় দেখা দিলে, তাৎক্ষণিকভাবে আমদানির অনুমোদন বাতিল বলে গণ্য হবে (শর্ত ৭)।
২০২২ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ চলছে। তারপরও ৭ নম্বর শর্ত উপেক্ষা করে এ আমদানি করা হয়েছে। অনুমোদনে বলা হয়েছে, এই আদেশ অমান্য করে মুরগির বাচ্চা আমদানি করলে সব দায়দায়িত্ব আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, কয়েক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে আমদানিকারক কোম্পানি থেকে ‘অন্যায্য সুবিধার বিনিময়ে’ বার্ড ফ্লু আক্রান্ত দেশ থেকে মুরগির বাচ্চা আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের পোলট্রি খাতকে হুমকির মুখে ফেলা হয়েছে।