
কৃষিখাতে বাজেট কেমন হওয়া প্রয়োজন
কৃষি খাতের বাজেট: ২০২৫-২৬
বাংলাদেশে কৃষি খাতের বাজেট পটভূমি নির্ধারণ করতে হলে দেশের সামগ্রিক কৃষিনির্ভর অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং কৃষকের জীবনমান উন্নয়নের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে হবে।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও অবদান: কৃষি বাংলাদেশের জিডিপির প্রায় ১২-১৪ শতাংশ অবদান রাখে এবং দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী (প্রায় ৪০ শতাংশ) এই খাতে নিয়োজিত। বাজেট নির্ধারণে এই খাতের কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্য নিরাপত্তায় অবদানের দিকগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
খাদ্য নিরাপত্তা ও খাদ্য মজুত: খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, বীজ, সার, সেচ সুবিধা ও কৃষি গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ।
কৃষকের স্বার্থ সংরক্ষণ:
ভর্তুকি প্রদান: সার, ডিজেল ও কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা এবং সহজলভ্য করা।
কৃষিঋণ: সহজ শর্তে কৃষিঋণ প্রদান এবং ঋণগ্রস্ত কৃষকদের জন্য সহায়তা তহবিল গঠন করা। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন।
গবেষণা ও প্রযুক্তি: কৃষি গবেষণায় বাজেট বাড়ানো, বিশেষ করে জলবায়ু সহনশীল জাত উদ্ভাবনে। ডিজিটাল কৃষি তথ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ।
পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি: জৈব ও পরিবেশবান্ধব কৃষিচর্চার প্রসার। সেচে পানির অপচয় রোধ ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তির ব্যবহার উৎসাহিত করা।
কেমন হওয়া উচিত কৃষি খাতের বাজেট:
বাংলাদেশের কৃষি খাতের বাজেট এমনভাবে হওয়া উচিত, যাতে কৃষকদের জীবনমান উন্নত হয়, উৎপাদনশীলতা বাড়ে এবং কৃষিকে টেকসই ও প্রযুক্তিনির্ভর খাতে রূপান্তর করা যায়।
উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য ভর্তুকি: সার, বীজ, সেচ, বিদ্যুৎ ও কৃষি যন্ত্রপাতিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিতে হবে। কৃষক যেন বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে এই উপকরণ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়ন: কৃষি গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে (BRRI, BARI, BAU ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো)। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহনশীল জাত উদ্ভাবনে বিনিয়োগ জরুরি।
সার্বিক কৃষি অবকাঠামো উন্নয়ন: সেচ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন। গ্রামীণ কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ করতে সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন।