রাজনৈতিক দলটি অপাঙ্ক্তেয় হলো যে কারণে

দেশ রূপান্তর সেলিম খান প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৫, ০৯:১৩

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং ১৯৫৫ সাল থেকে আওয়ামী লীগের আজকের দুই হাজার পঁচিশ। আওয়ামী লীগের প্রায় ৭০ বছরের এই কার্যপরিধিকে আমরা দুটি পর্যায়ে ভাগ করতে পারি। সময়গত দিক থেকে বলা যায় এক. পাকিস্তান পর্যায়। দুই. বাংলাদেশ পর্যায়। এই দুই সময়ে দলটির ভূমিকা কখনো ছিল রাজনৈতিক আবার কখনোবা রাষ্ট্রনৈতিক। পাকিস্তান পর্যায়ের সময়টা ঊনপঞ্চাশ থেকে একাত্তর। এ সময়ের কার্যপরিধির বেশিরভাগ সময়টাই ছিল রাজনৈতিক। এর মধ্যে যদিও যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময় কিছুটা ভূমিকা ছিল রাষ্ট্রনৈতিক। কিন্তু বাকি পুরোটা সময়ই দলটি ভূমিকা রেখেছে, এমনকি নেতৃত্ব দিয়েছে এই ভূখণ্ডের আপামর মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া পাকি শাসকদের বৈষম্য, নিপীড়ন আর আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে। প্রায় ৭০ বছরের সংগ্রামমুখী এই দলটি আজ গণধিকৃত। রাষ্ট্রিকভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু কেন? সেই কেনর উত্তর খুঁজতেই এই নিবন্ধের অবতারণা। সেদিন থেকে এদেশের মানুষ বুঝতে পারে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন করে তারা ভুল করেছে। বাংলা অঞ্চলের মানুষের সেই ভুলকে পুঁজি করে তখন থেকেই এই দলটি আপামরের অধিকার, মর্যাদা, স্বাধিকার, প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময়ই এগিয়ে রেখেছে নিজেকে। প্রথম দিকে গোটা পাকিস্তানের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মীয় অনুভূতিকে বিবেচনায় নিয়ে নিজেকে আওয়ামী মুসলিম লীগ হিসেবে পরিচিত করালেও খুব দ্রুতই মুসলিম অভিধাটি ঝেড়ে ফেলে শরীর থেকে।


পাকিস্তানি শাসকদের ধর্মের নামে মানুষের আর্থ-সামাজিক ও সর্বোপরি রাষ্ট্রনৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়াকে বৈধ করার যাবতীয় প্রয়াসবিরুদ্ধতায় বরাবরই সোচ্চার থেকেছে এই দলটি। পাকিস্তানি শাসন-শোষণ আর নিপীড়ন বিরুদ্ধতায় দেশের সব মানুষকে এককাতারে নিয়ে আসার কাজে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখে দলটি। অবিসংবাদিত এক নেতা হয়ে ওঠেন দলের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান। দল হিসেবে এমনিতর আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে, শাসকদের সঙ্গে অনেক সময়েই করতে হয়েছে আপসরফা। চূড়ান্ত বিজয় অর্জনেও নিতে হয়েছে সর্বাত্মক সহযোগিতা! বলা বাহুল্য, একাত্তর পরবর্তীকালেও এই দলটির ভূমিকা ছিল উপরেল্লিখিত দুটি পর্যায়ের মতোই।


স্বাধীনতা-পরবর্তী সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্রনৈতিক পর্যায় : এর মধ্যে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ম্ুিক্তযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অন্য সব দল ও গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততাকে অস্বীকার করে একদলীয় ও একচ্ছত্র শাসনকাঠামো প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব অর্জন করে দলটি। অথচ এই দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, যাকে কিনা স্বাধীনতা অর্জনের একমাত্র কারিগর হিসেবে রাজমুকুটে অভিষিক্ত করেছিল এদেশের মানুষ। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে হয়ে ওঠেন ‘ক্ষমতার মানুষ’, ‘ক্ষমতাবানদের মানুষ’! পরিবার, দল আর স্বজন তোষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যান। বেপরোয়া আর জনবিরুদ্ধ করে তোলেন নিজেকে, সে সঙ্গে পরিবার ও স্বজনদেরও। একক নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয় আর রাষ্ট্রক্ষমতার জোরে একসময়ের জনসম্পৃক্ত দলটি হয়ে পড়ে জনবিচ্ছিন্ন ও জনধিক্কৃত। পরিণতি হয় জনপ্রত্যাখ্যান!


পঁচাত্তর পরবর্তী একুশ বছরের রাজনৈতিক পর্যায় : পঁচাত্তরে রাষ্ট্রনৈতিক পালাবদলের মধ্য দিয়ে দেশে এক প্রকার কবর রচিত হয় অন্তর্ভুক্তিমূলক বহুত্ববাদী রাজনৈতিক প্রপঞ্চের। রাষ্ট্রনৈতিক সিদ্ধান্তেই, প্রয়োজন মতো সংবিধান সংশোধন করে আইনি বৈধতা দেওয়া হয় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চর্চার অর্গল খুলে দিতে। ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সে সময় তিনি ছোট বোন শেখ রেহানাসহ সপরিবারে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ছিলেন। আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। সেসময় তিনি তার বাবা-মাসহ পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে খুনের বিচারের ভার দেশের মানুষের কাছে ছেড়ে দেন। সুযোগ চান রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করতে! সমর্থনও পেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের। এই সময়টাতেও দলটি শুধুই রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য ছিয়াশি সালে স্বৈরাচারী এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যায়। বিএনপি নেতৃত্বাধীন সাত দলীয় জোট নির্বাচন বর্জন করলেও, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরুদ্ধ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ নেয়। জামায়াত নির্বাচনে ১০টি সংসদীয় আসন পায়! আওয়ামী লীগ সেসময়ে নির্বাচনে না গেলে জামায়াত এভাবে প্রথমবারের মতো দেশের রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীজন হয়ে উঠতে পারত না। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও