
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অস্থিরতা
সরকারপ্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝামেলা তৈরি হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর দপ্তর মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ধরন এবং সরকারপ্রধানের কাজের যে বৈচিত্র্য ও গতি, তার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাল-লয় ঠিক রেখে চলতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদাহরণ, প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর সামনে রেখে টোকিওতে আজ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরামর্শমূলক সভা (এফওসি) নিয়ে একের পর এক সিদ্ধান্তে বদল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় কদিন পরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বদলানোর আওয়াজ ওঠে। মুহাম্মদ ইউনূস অবশ্য বৈদেশিক সম্পর্কের নানা দিক দেখভাল করতে উচ্চপর্যায়ে নতুন নতুন মুখ যুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়েছেন। এর মধ্যেও কিছু ঝামেলা তৈরি হওয়ায় অবশেষে সরকার পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
পররাষ্ট্রসচিব বদলানো হচ্ছে কি না—প্রশ্নটি গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকা থেকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমকে করা হলে তিনি নিরুত্তর থাকেন। সেদিনই একই প্রশ্ন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অন্য এক কর্মকর্তাকে করা হলে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব বদলানোর কথা অনেক দিন থেকেই হচ্ছে।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত বছরের ৫ আগস্ট। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক মো. তৌহিদ হোসেনকে। তৌহিদ হোসেন ২০০৬ সালের শেষ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে ছিলেন। পরে তাঁকে পররাষ্ট্রসচিব করা হয়। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তা কূটনৈতিক পরিসরে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ফরেন সেক্রেটারি’ হিসেবে পরিচিত।