
একের পর এক ঘটনা, ভোট নিয়ে নানা আলোচনা
সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে যেমন উত্তেজনা তৈরি করেছে, তেমনি নানা আলোচনার জন্মও দিয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোচনা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও সামনে এসেছে।
তবে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, কোনো ঘটনাই জাতীয় নির্বাচনের মতো জনদাবিকে আড়াল করতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ধারণাও একই রকম।
বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করে নির্বাচনের পথনকশা চেয়ে আসছে। আর জামায়াত কিছু মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে সম্ভব হলে ডিসেম্বরেই, তা না হলে আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান চায়।
কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে সংঘটিত কিছু ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। যার রেশ এখনো রয়ে গেছে। এর মধ্যে গত এপ্রিলের শেষ দিকে রাজনীতিতে প্রধান আলোচ্য বিষয়ে হয়ে ওঠে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে খাদ্যসহায়তা পাঠানোর জন্য ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবনা। সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা এ-সংক্রান্ত বক্তব্যের পর রাজনৈতিক দলগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাষ্ট্রব্যবস্থার নানামুখী সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা চলছে। এমন সময়ে ‘করিডর’ নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের সৃষ্টি হয়। এই উত্তাপের মধ্যেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি হঠাৎ তীব্রভাবে সামনে আসে। গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাবে থাকা তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এতে জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামসহ কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন দলমতের অনুসারী নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা সমর্থন জোগান। এ দাবিতে টানা তিন দিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ ঘিরে অবস্থান, অবরোধ ও গণজমায়েতের কর্মসূচির মধ্যে সরকার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করার ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নির্বিচার গুলি করে মানুষ হত্যার দায়ে শেখ হাসিনা, তাঁর সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের পাশাপাশি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।