বাংলাদেশও কি তবে যুদ্ধে জড়াচ্ছে?

ডেইলি স্টার আলতাফ পারভেজ প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৫, ২০:০৬

পাকিস্তান ও ভারত আবার একটা যুদ্ধের ভেতর ঢুকেছে। অতীতে তিনবার যুদ্ধ করেছে তারা। সেসব যুদ্ধের অভিজ্ঞতা বলছে, এই দুই দেশের যুদ্ধ তাদের সীমানায় সীমিত থাকে না। তার আঁচ ছড়ায় বাংলাদেশেও। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচের মতো ওই উভয়ের গোলাগুলিতেও মানসিকভাবে নিরপেক্ষ বা নির্মোহ থাকতে পারেন না বাংলাদেশ-সমাজ।


এটা কেবল ধর্মের কারণে ঘটে না, ভৌগলিক অতীতের কারণেও হয়। যা আবার পুরোপুরি অতীত হয়েও যায়নি। সামাজিক স্তরে অবস্থাটা অনেক সময় এমনই মনে হয় যে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ভারত যেন পারস্পরিক ঝগড়ায় লিপ্ত একটা যৌথ পরিবার। 'অতীত' এই তিন সমাজকে রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত করেছে, কিন্তু পৃথক 'বর্তমান' তাদের নিরাসক্ত করতে পারেনি।


ফলে কাশ্মীর ও পাঞ্জাব সীমান্তে যত রক্ত ঝরবে, বাংলাদেশও তত তেতে উঠবে। যুদ্ধের প্রথম দিনই দেশের প্রধান কাগজে কাজ করা বন্ধু জানালেন তাদের 'ভিউয়ার' তিনগুণ বেড়েছে।


পাকিস্তানে গোলা ছোঁড়ার পাশাপাশি ভারত যুদ্ধের প্রথম দিনই তার আঁচ ছড়িয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তেও ব্যাপকভাবে 'পুশইন' কর্মসূচি নিয়ে। ৮ মে এই লেখা তৈরির সময় খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, কুড়িগ্রামসহ অনেক সীমান্তে 
ভারত তার দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। শত শত মানুষকে ইতোমধ্যে তারা পুশইন করতে সমর্থ হয়েছে।


দরিদ্র প্রকৃতির এই মানুষদের একাংশ বাংলাভাষী এবং তাদের গুজরাট অঞ্চল থেকে ধরে এনে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন হলো—বাংলাভাষী হলেই কি কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায়? আর, ভারতে যদি অবৈধভাবে কোনো বাংলাদেশি থাকেন, সেই বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে কথাবার্তা বলা যেতো। তার বদলে যেভাবে সীমান্তের অনেকগুলো জায়গা দিয়ে একযোগে পুশইন কর্মসূচি নেওয়া হলো, তা উসকানিমূলক।



ইতোমধ্যে পুশইনে ঢুকিয়ে দেওয়া মানুষরা এও বলছেন, সীমান্তের ওদিকে ভারতের বিভিন্ন সংস্থা আরও বাংলাভাষীদের জড়ো করছে। আরাকান থেকে ভারতে যাওয়া অনেক রোহিঙ্গাদের জড়ো করা হয়েছে বাংলাদেশে পুশইন করার জন্য। তথ্য হিসেবে এসব অতি উদ্বেগজনক। এরকম পদক্ষেপ যে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে চাপে ফেলবে, ক্ষুব্ধ করবে সেটা ভারতের নীতিনির্ধারকদের না বোঝার কারণ নেই।


পুশইন সামাল দিতে নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের সামনে পুশব্যাক কর্মসূচি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। সেটা অমানবিক হলেও বাংলাদেশ সরকারের সামনে এক্ষেত্রে কোনো বিকল্প থাকছে না। পাল্টাপাল্টি পুশইন ও পুশব্যাক সীমান্ত পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করতে বাধ্য। সে কারণেই জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, ভারত কি তবে পাকিস্তান সীমান্তের মতো বাংলাদেশ সীমান্তেও উত্তেজনা ছড়াতে চায়?


এই প্রশ্নটি এ কারণেও গুরুত্বপূর্ণ, গত ৭-৮ মাস ধরে বাংলাদেশ ভারতের ভেতর থেকে অকল্পনীয় এক প্রচারযুদ্ধের শিকার। বাংলাদেশে কী ধরনের সরকার থাকবে সেটা একান্তই বাংলাদেশের মানুষের পছন্দের ব্যাপার। এখানকার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে ভারত সরকার তার জন্য সুখকর মনে না করার কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সেজন্য পুরো দেশকে এবং এখানকার সব মানুষকে জড়িয়ে লাগাতার অসত্য প্রচারণাকে এক ধরনের পদ্ধতিগত বৈরিতা হিসেবে দেখার অবকাশ রয়েছে। এরকম বৈরিতাকে নরম ধাঁচের যুদ্ধকৌশল হিসেবেও দেখা যায়।


ভারতের দিক থেকে ক্রমাগত এরকম বৈরী প্রচারণা এবং ব্যাপক হারে পুশইন চেষ্টার পাশাপাশি দক্ষিণ সীমান্তেও উত্তেজনাকর এক অবস্থায় পড়েছে বাংলাদেশ।


অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আরাকান থেকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ বেশ বেড়ে গেছে। গত ৭-৮ মাসে লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় আশ্রয় শিবিরগুলোতে এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখে দাঁড়িয়েছে। আশ্রয়ের খোঁজে আসা নতুন-পুরোনো এই মানুষদের নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের একটা বড় কারণ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা কমে আসার আলামত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও