মা দিবসে দুটি ভিডিও, কিছু প্রশ্ন

প্রথম আলো গোলাম কিবরিয়া প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৫, ২০:০৫

সম্প্রতি ফেসবুকে দুটি ভিডিও ক্লিপ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। দুটি ভিডিওর বিষয়বস্তু একেবারেই বিপরীতধর্মী, তবে একটি জায়গায় দুটি ক্লিপের মিল রয়েছে। দুটি ভিডিওর কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন মা।


প্রথমটি মা দিবস উপলক্ষে হিন্দি ভাষায় নির্মিত একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, একজন মা স্কুলের অধ্যক্ষের কাছে একটি ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে হাজির। তাঁর অভিযোগ, স্কুলের কিছু দুষ্টু ছেলেমেয়ে মেয়েটিকে নানাভাবে হেনস্তা করে। আজ নিজের চোখে তিনি সেটা দেখেছেন। এ বিষয়ে একটি শিশুর নাম উল্লেখ করে কয়েকজনের বিরুদ্ধে নালিশ জানালেন সেই মা।


অধ্যক্ষ তাৎক্ষণিক সেই ছেলে ও তার বন্ধুদের ডেকে পাঠালেন। আর এখানেই কাহিনির টুইস্ট। দেখা গেল, যে মা এই অভিযোগ করেছেন, তিনি আসলে অভিযুক্ত শিশুটির মা। নিজের ছেলের অন্যায় আচরণের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের কাছে নালিশ করতে এসেছেন। এখানে যে বার্তাটি আমরা পাই, নিজের সন্তান কোনো অন্যায় করলেও তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এটাই মা দিবসের শিক্ষা।


আর দ্বিতীয় ভিডিওটি কোনো বানোয়াট কাহিনি নয়। এই দেশের, এই সমাজের একটি বাস্তব ঘটনা, যেটা ঘুম থেকে উঠেই সকাল সকাল দেখলাম।


সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মুন্সিগঞ্জের একটি লঞ্চে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীকে বেদম প্রহার করছে একটি ছেলে, যাকে পরে পুলিশ আটকও করেছে। যে ভিডিওর কথা আমি এখানে বলছি, তাতে দেখা গেছে, ঘটনার হোতা সেই ছেলেটির মা দাবি করছেন, তার সন্তান ‘ভালো কাজ’ করেছে। মেয়েটিকে সে ‘জনরোষ থেকে বাঁচাতে’ মারধর করেছে।



একটি জনাকীর্ণ লঞ্চঘাটে জনসমক্ষে একটি মেয়েকে বেদম পিটুনির ঘটনাকে যে মা ‘ভালো কাজ’ বলে অভিহিত করতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে আমরা আর কী আশা করতে পারি! সেই মায়ের সন্তানের পক্ষে কি কখনোই এই বোধ জাগ্রত হওয়া সম্ভব যে নারীদের হেনস্তা করাটাও একটা বড় অপরাধ?


আজকের দিনে আমাদের চারপাশে নারীদের হেনস্তা করা, নারীর প্রতি সহিংসতা, পদে পদে তাঁদের অসম্মান আর অপদস্থ করার যে ঘটনাগুলো আমাদের সামনে ভেসে ওঠে, তার একটি সরলরৈখিক কারণ বা এর পেছনের মনস্তত্ত্ব বোঝা আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পক্ষে হয়তো সম্ভব নয়।


সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নারীদের প্রতি এমন বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠছে, সেই প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ জবাবটা না পেলেও উল্লেখিত ভিডিওটি থেকে এর পেছনের একটা অন্যতম কারণ হয়তো আমরা বুঝতে পারছি।


প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতিনিয়ত অসম্মান, অপদস্থ হওয়া বা হেনস্তার শিকার হওয়ার সমস্যাটি কি শুধু নারীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য? এই অস্থির সমাজে আসলে ক্রমেই সামগ্রিকভাবে মানুষের প্রতি মানুষের সম্মানবোধ, পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সৌজন্য কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে।


যে কারণে আমরা দেখতে পাই, লঞ্চঘাটে একটি মেয়েকে যখন নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে, তখন সেখানে উপস্থিত জনতা উল্লাস নিয়ে সেটি দেখছেন ও ভিডিও করছেন। কেউ কেউ আওয়াজ তুলছেন, ‘ঠিক ঠিক’ বলে। এটা কোনো সুস্থ সমাজের চিত্র হতে পারে না। ‘ম্যাস হিস্টরিয়ার’ মতো আমরা সম্ভবত ‘ম্যাস পারভারশনে’ আক্রান্ত হচ্ছি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও