শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা : সম্প্রীতি এবং মানবতাবোধ

ঢাকা পোষ্ট ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৫, ২০:০২

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা, এটি বৌদ্ধদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতীয় ও ধর্মীয় উৎসব। এ দিনটি বিশ্ববৌদ্ধদের নিকট অতি পবিত্র ও মহিমান্বিত দিন। ভগবান বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমার বিশাখা নক্ষত্রে রাজকুমার সিদ্ধার্থ রূপে কপিলাবস্তুর লুম্বিনী কাননে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে আলোকপ্রাপ্ত অর্থাৎ সর্বতৃষ্ণার ক্ষয় সাধন করে বোধিজ্ঞান লাভ করে জগৎ পূজ্য বুদ্ধ হয়েছিলেন।


বুদ্ধ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। বুদ্ধের জীবনে মহাপবিত্র ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধদের নিকট অতি গৌরবের ও মহাপবিত্র দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। বিশ্ব বৌদ্ধরা একে বৈশাখ দিবস বা Vesak day হিসেবে উদযাপন করে। কারণ বৈশাখ মাসে সংগঠিত হয়েছিল বলে এটা বুদ্ধ পূর্ণিমা না বলে বৈশাখ দিবস বলে থাকে। 


জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত United Nation day of Vesak হিসেবে ২০২৫ সালে বিশ্ব বৌদ্ধদের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভিয়েতনামে  দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। ২৫৬৯ বুদ্ধবর্ষ ২০২৫ সালের বুদ্ধ পূর্ণিমা। বাংলাদেশের বৌদ্ধরাও নানা কর্মসূচির মাধ্যমে এ পবিত্র দিবসটি উদযাপন করছে।


বুদ্ধবর্ষ গণনায় বৈশাখই প্রথম মাস। সেই হিসাবে বৌদ্ধ প্রধান দেশগুলোও তাদের পহেলা বৈশাখ বৈশাখের প্রথম দিনে উদযাপন করে। বিশেষত থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, ভারতের কিছু কিছু প্রদেশ। বাংলাদেশও বৈশাখ মাসের প্রথম দিবসটি পহেলা বৈশাখ হিসেবে উদযাপন করে।


যদিও পহেলা বৈশাখের প্রর্বত্তক মোগল সম্রাট আকবর বলে ইতিহাসবিদরা মতামত দিলেও প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধের সময়কাল থেকেই বাঙালি জাতি বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে গণনা করতেন। তার কারণ এদেশে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে পাল রাজাদের ভূমিকা ছিল। পাল রাজা বাঙালি ও বৌদ্ধদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাদের চারশত বছরের অসাম্প্রদায়িক শাসন কালকে ইতিহাসে স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে।



মোগল সম্রাট আকবরও একজন অসাম্প্রদায়িক শাসক ছিলেন। তার আমলে যে যে অঞ্চলে জনহিতকর কার্যাবলী ছিল ও ভালো দিক তা গ্রহণ করেছিলেন। পহেলা বৈশাখ অসাম্প্রদায়িক ছিল বিধায় সম্রাট আকবর তা গ্রহণ করে ছিলেন। এটা বৌদ্ধধর্মের প্রভাবের কারণে সমগ্র এশিয়ায় বৈশাখই বছর গণনায় প্রথম মাস। এটা বুদ্ধের জন্মোৎসবের কারণেই এ ঐতিহাসিক ঘটনা। তাই ভগবান গৌতম বুদ্ধও একজন ঐতিহাসিক মহামানব হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত।


শুধু বিশেষ আকার বা একটি কাঠামোর জন্য মানুষ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন না। মানুষ হিসেবে আমাদের রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তি নামক বিশেষ একটি গুণ যার ধর্ম হলো যেকোনো বিষয়ে আমাদের আমার বিচারিক ক্ষমতা বা মূল্যায়নের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। আজ থেকে আড়াই হাজার বছরেরও পূর্বে এ ভূভাগে জন্ম নেওয়া তথাগত বুদ্ধ দাবি করেছিলেন সর্ব জীবের স্ব স্ব স্থানে স্বাধীন অবস্থান।


শুধু মাত্র মানুষের জন্য নয় তার মৈত্রী ভাব পৌঁছে গিয়েছিল দৃষ্টিগোচর হয় এবং দৃষ্টিগোচর হয় না এমন সব প্রাণীর কাছে। তাই তো তিনি বলেছিলেন—‘সব্বে সত্ত্বা সুখিতা হোন্তু’ অর্থাৎ, জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক। বোধের অমৃত অবগাহন হলে প্রাজ্ঞদের সবাই স্বীকার করেন, জাতপ্রথা, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র বিভাজন নিষ্ফল, নিরর্থক!


বোধের বাতায়ন রুদ্ধ থাকার দরুণ অন্ধ প্রকোষ্ঠে মানুষ মানুষের সাথে, ধর্ম ধর্মের সাথে, গোত্র গোত্রের সাথে, পিতা পুত্রের সাথে, পুত্র পিতার সাথে, ভাই ভাইয়ের সাথে, বন্ধু বন্ধুর সাথে নানান স্বার্থের কারণে কলহরত। মহান বুদ্ধ বলেন, কলহে জর্জরিত অন্ধ মানুষ জানে না, সে নিজেই যেখানে নিজের নয়, অন্যর অধীনে বশ করতে চায় কী করে?


বুদ্ধের শিক্ষা পাঠোদ্ধার করলে দেখা যায়, জীব মাত্রই স্বাধীন। পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয়ভাবে নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবাই স্বাধীন অংশগ্রহণ, স্বতন্ত্র জীবন যাপনের অধিকার রাখে। এখানে কোনো বৈষম্য দেখা দিলে তা বুদ্ধধর্মের পরিপন্থী বলেই গণ্য হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও