You have reached your daily news limit

Please log in to continue


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় ও রচনায় শিশুচরিত্র

জমিদারের সন্তান এবং বিশাল পরিবারের সদস্য হলেও অনেকটাই নিঃসঙ্গ কেটেছে রবীন্দ্রনাথের শিশুকাল। এই নৈঃসঙ্গ্য তাকে কাবু করেনি বরং প্রকৃতির রূপ উপভোগ ও কল্পনাবিলাস তাকে করে তুলেছে ভাবুক ও কবি।

স্মৃতিকথায় তিনি লিখেছেন, ‘গাড়ি যখন সবুজ প্রান্তরের মাঝখান দিয়ে চলছিল তখন মনে হচ্ছিল যেন নিজের কাছ থেকে দৌড়ে ছুটে পালাচ্ছি। একদিন আমার বয়স অল্প ছিল, আমি ছিলুম বিশ্বপ্রকৃতির বুকের মাঝখানে, নীল আকাশ আর শ্যামল পৃথিবী আমার জীবন-পাত্রে প্রতিদিন নানারঙের অমৃতরস ঢেলে দিত, কল্পলোকের অমরাবতীতে আমি দেবশিশুর মতোই আমার বাঁশি হাতে বিহার করতুম।’

সারাজীবন তিনি এই দেবশিশুর বোধকে তিনি লালন করতেন। তাই শিল্প-সাহিত্যের সব শাখায় সমান বিচরণ করতে গিয়ে তিনি শিশুদের জন্য ভাবনার জায়গাটিও উন্মুক্ত রেখেছিলেন।

সাহিত্যে বিশেষ করে লোকসাহিত্যে শিশুর উপযোগী উপকরণ যথেষ্টই আছে। প্রাক-রবীন্দ্রযুগের সাহিত্যের শিশু রয়েছে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথই প্রথম শিশুদের কথা ভেবেছেন শিশুদের মতো করেই। শিশুদের মনের কথা, যা একান্তই তাদের নিজস্ব—এই বোধ তিনি লালন করেছেন। শিশুদের এই ভাবনা যা শিশু হয়তো তা মা-বাবার কাছেও খোলসা করে প্রকাশ করে না, রবীন্দ্রনাথ সেই কথাগুলোও তুলে এনেছেন তার ছড়া, গান ও নানান রচনায়।

রবীন্দ্রনাথ কবিতা রচনার শুরু করেছেন শিশু বয়সেই। তার স্মৃতিকথায় জানা যায়, “আমার বয়স তখন সাত-আট বছরের বেশি হইবে না। আমার এক ভাগিনেয় শ্রীযুক্ত জ্যোতিপ্রকাশ আমার চেয়ে বয়সে বেশ একটু বড়ো। তিনি তখন ইংরাজি সাহিত্যে প্রবেশ করিয়া খুব উৎসাহের সঙ্গে হ্যামলেটের স্বগত উক্তি আওড়াইতেছেন। আমার মতো শিশুকে কবিতা লেখাইবার জন্য তাঁহার হঠাৎ কেন যে উৎসাহ হইল তাহা আমি বলিতে পারি না। একদিন দুপুরবেলা তাঁহার ঘরে ডাকিয়া লইয়া বলিলেন, ‘তোমাকে পদ্য লিখিতে হইবে।’ বলিয়া, পয়ারছন্দে চৌদ্দ অক্ষর যোগাযোগের রীতিপদ্ধতি আমাকে বুঝাইয়া দিলেন।” (কবিতা রচনারম্ভ)

মায়ের সঙ্গে শিশুর যে সম্পর্ক তা রবীন্দ্রনাথ সুন্দরভাবে অংকন করেছেন। তার ‘শান্তিনিকেতন’ প্রবন্ধে পাই তারই চমৎকার ও সাবলীল প্রকাশ, ‘মাতাই শিশুকে জানিয়ে দিলে, বিশাল বিশ্বজগৎ তার আত্মীয়, নইলে মাতা তার আপন হত না। মাতাই তাকে জানিয়ে দিলে, নিখিলের ভিতর দিয়ে যে যোগের সূত্র তাকে বেঁধেছে, সেটি কেবল প্রাকৃতিক কার্যকারণের সূত্র নয়, সে একটি আত্মীয়তার সূত্র। সেই চিরন্তন আত্মীয়তা পিতামাতার মধ্যে রূপ গ্রহণ করে জীবনের আরম্ভেই শিশুকে এই জগতে প্রথম অভ্যর্থনা করে নিলে। একেবারেই যে অপরিচিত, এক নিমেষেই তাকে সুপরিচিত বলে গ্রহণ করলে, সে কে? এমনটা পারে কে? এ শক্তি আছে কার? সেই অনন্ত প্রেম, যিনি সকলকেই চেনেন এবং সকলকেই চিনিয়ে দেন।’

কেবল মা নন, বাবার সঙ্গে শিশুর সম্পর্কও তিনি আবিষ্কার করেছেন। তার ভাবনার সব অংশ জুড়েই শিশু। তাই শান্তিনিকেতন নিয়ে লিখতে গিয়েও তিনি শিশুর কথা ভোলেননি। মাতাপিতার দায়িত্ব পালনের কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। শিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা এবং পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে ওঠা নিয়ে তাঁর দর্শন এরকম—‘ভগবান তাকে তাদের সঙ্গে সমান হতে দেবেন না; তিনি চান যে তাঁর বিশ্বের মধ্যে কেবল মানুষই আপনাকে গড়ে তুলবে, আপনার ভিতরকার মনুষ্যত্বটিকে অবাধে প্রকাশ করবে। সেইজন্যে তিনি মানুষের শিশুকে সকলের চেয়ে অসহায় করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, তাকে উলঙ্গ করে দুর্বল করে পাঠিয়েছেন। আর-সকলেরই জীবনরক্ষার জন্যে যে-সকল উপকরণের দরকার তা তিনি দিয়েছেন; বাঘকে তীক্ষ্ম নখদন্ত দিয়ে সাজিয়ে পাঠিয়েছেন। কিন্তু, এ কী তাঁর আশ্চর্য লীলা যে, মানুষের শিশুকে তিনি সকলের চেয়ে দুর্বল অক্ষম ও অসহায় করে দিয়েছেন! কারণ, এরই ভিতর থেকে তিনি তাঁর পরমা শক্তিকে দেখাবেন। যেখানে তাঁর শক্তি সকলের চেয়ে বেশি থেকেও সকলের চেয়ে প্রচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে সেইখানেই তো তাঁর আনন্দের লীলা। এই দুর্বল মনুষ্যশরীরের ভিতর দিয়ে-যে একটি পরমা শক্তি প্রকাশিত হবে এই তাঁর আহ্বান।’ (শান্তিনিকেতন)

রবীন্দ্রসাহিত্যে ‘শিশু’ শব্দটি যেমন হুবহু আছে তেমনি তার প্রতিশব্দ যেমন ছেলেবেলা, ছোটবেলা কিংবা সমাসবদ্ধ নানান যুক্তশব্দও রয়েছে। রবীন্দ্ররচনাবলি ঘেঁটে সরাসরি ‘শিশু’ শব্দটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে, তার একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাব করা যায়। তাতে দেখা যায়, শিশু-সম্পর্কিত বিভিন্ন শব্দ এসেছে ৮৭২ বার।

‘শিশু’ শব্দটি সরাসরি এসেছে ৩৩৭ বার। ষষ্ঠী বিভক্তিযুক্ত ‘শিশুর’ শব্দটি এসেছে ২২৫ বার। ‘শিশুকাল’ ১২২ বার, ‘শিশুদের’ ৭০ বার, ‘শিশুকে’ ৪৩ বার, ‘শিশুকালে’ ২৪ বার, ‘শৈশব’ ১৮ বার, ‘শিশুরে’ ১২ বার, ‘শিশুদিগকে’ ১১ বার, ‘শৈশবকাল’ ৮ বার, ‘শিশুতে’ ২ বার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন