মুক্ত গণমাধ্যম, মুক্তিযুদ্ধ এবং মোবাইল ফোন

www.ajkerpatrika.com অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রহমান প্রকাশিত: ০৩ মে ২০২৫, ০৯:১৭

১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৩ মে পালিত হয় বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবস। এই দিনটিতে সাংবাদিকেরা আত্ম-উপলব্ধির দিন হিসেবে গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের নিরাপত্তা ও পেশাগত দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে থাকেন।


বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির সম্ভাবনায় বিশ্ব আজ তথ্যপ্রবাহের মাধ্যমে প্রায় সব সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। তথ্য সেবার অন্তর্গত এবং তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে জনগণের তথ্য চাহিদা মেটানো ও ব্যক্তি পর্যায়ে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আজকে দায়বদ্ধ। এখানে শুধু ভোক্তা এবং বিক্রেতার সম্পর্ক বিদ্যমান থাকলেই চলবে না। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়ত্বশীলতা স্বীকার করতে হবে। সাম্প্রতিক বিশ্বে সংবাদপত্র তথা সংবাদবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে তথ্যের গুণাগুণ বিচার অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। অনেক দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদ সরবরাহের সুযোগের সঙ্গে ভোক্তার তথ্য ব্যবহারের অধিকার নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। আমাদের দেশে মানবসম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করে সময়োপযোগী আধুনিক তথ্যব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং তার জন্য আইনি কাঠামোর আধুনিকায়ন প্রয়োজন। পাশ্চাত্যের অনেক দেশেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সংবাদ সরবরাহ এবং সংবাদ সম্পাদনার কাজ সহজ করা হয়েছে কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একই ধারায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সেই সুযোগ কার্যকর করা কতখানি যথাযথ হচ্ছে, তা নিরীক্ষা করা দরকার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপরিকল্পিত ব্যবহার এই ক্ষেত্রে সঠিক হবে না বরং তা আত্মঘাতী হতে পারে। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সেই মানসিকতায় নিজেদের সমৃদ্ধ করবে, এটাই প্রত্যাশা।


তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অস্বীকার করে আমরা নিশ্চয়ই লাভবান হতে পারব না। বড় বড় প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় রাখতে হবে যে সম্ভাবনাময় বিশ্বে আমরা নিশ্চয়ই বিচ্ছিন্ন থাকতে পারব না। বিজ্ঞানের অগ্রগতি অস্বীকার করেও থাকতে পারব না। সব পক্ষের সমন্বয় ও সমঝোতা এবং সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অগ্রসর হওয়াই বিবেচনাপ্রসূত কাজ হবে বলে মনে করি, যাতে আমরা জাতি হিসেবে যেন পিছিয়ে না পড়ি। আজকের দিনে তাই গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন পেশা তথা রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলোর মেলবন্ধন গড়ে তুলতে হবে, যেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থের সংঘাত প্রকট হয়ে না ওঠে। গতিশীল সমাজব্যবস্থায় একই সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নৈতিক অবস্থান যেন পারস্পরিক সুশাসনের সহজাত প্রক্রিয়া হয়।



আমরা জানি, আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকর্মীরা এই দিনে দেশে দেশে আলোচনা, সেমিনার, প্রতর্ক-বিতর্ক, সভা-সমিতিসহ বিশেষায়িত লেখা প্রকাশ থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের ওপর নানা ধরনের লাঞ্ছনা-গঞ্জনার ফিরিস্তি প্রকাশ করে তার প্রতিকার দাবি করে থাকেন এবং পেশাগত অধিকার আদায়ে সোচ্চার হন। বরং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁরা শুধু সংবাদ প্রকাশ কিংবা সংবাদ আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে সব সেক্টরে সমন্বিতভাবে সক্রিয় অবদান রাখতে পারেন।


দুই.


সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শ্রদ্ধেয় সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আজকের পত্রিকায় একটি লেখা লিখেছেন ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আসলেই শেষ হয়নি’ শীর্ষক শিরোনামে। তিনি গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে মৌলবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। একদিক দিয়ে এটা অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। কেননা, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান ও পরাভূত করে। কিন্তু পরাভূত শক্তি আবার ফিরে এসেছে। তার পরাজয়টা কেবল যে সশস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ঘটেছিল তা নয়, ঘটেছিল আদর্শিকভাবেও। তাহলে কেন তার পুনরুত্থান?...দৈহিকভাবে হেরে গিয়ে এবং ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে ছিল মাত্র, পরে পরিস্থিতি আগের মতো প্রতিকূল নেই দেখে ফিরে এসেছে।’


কথা হচ্ছে, দেশের মানুষ গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বাদ নিতে পারেনি, কয়েক যুগ পার হয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের সত্যিকার অর্থে মুক্তি মেলেনি। কতিপয় ব্যক্তি দুঃশাসনের ফাঁক দিয়ে নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করেছেন মাত্র। সমাজ বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আধুনিক জীবনমানের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয়। পরিবার ও সমাজজীবন স্বীকার করে মানুষ সময় অতিবাহিত করার চেষ্টা করে। সেখানে দেশ, কাল, পাত্র যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি দেশের শাসনব্যবস্থা ও শাসকগোষ্ঠীর নিয়ম-নীতি, আইনের শাসন এবং ন্যায়পরায়ণতাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। একটি সমাজ রাতারাতি তৈরি হয় না। যুগ যুগ ধরে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে একটা স্বাভাবিক অবস্থান সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক দল এবং নেতা-কর্মীরা ন্যায়পরায়ণ হলেই কেবল জনগণের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। আমাদের দেশে মানুষের ত্যাগের ইতিহাস আছে। জীবন উৎসর্গ করে বিশ্বে নজির স্থাপনের গৌরব আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও