
কোন ঘ্রাণে কী উপকার
আমাদের আবেগ ও মেজাজের ওপর ঘ্রাণের আছে দারুণ প্রভাব। ঘ্রাণ আমাদের কোনো প্রিয় স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে পারে, স্নায়ু প্রশান্ত করতে পারে, এমনকি সামনের দিনগুলোর জন্য উজ্জীবিত করতে পারে। লেবুপাতা থেকে তাজা ঘাস, এমন কিছুর প্রাণবন্ত ঘ্রাণ আমাদের মন ও মস্তিষ্কের ওপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে।
ঘ্রাণ ও আবেগের মধ্যে সম্পর্কটির পেছনে ভূমিকা পালন করে মানুষের জৈবিক গঠন। আমাদের ঘ্রাণশক্তি সরাসরি লিম্বিক সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত। লিম্বিক সিস্টেম হলো মস্তিষ্কের আবেগকেন্দ্র, যা আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘ্রাণশক্তির সঙ্গে লিম্বিক সিস্টেমের এই সংযোগের কারণেই কিছু ঘ্রাণ স্মৃতি জাগাতে পারে, আবেগ উদ্দীপিত করতে পারে, এমনকি আমাদের আচরণকেও প্রভাবিত করতে পারে। ঘ্রাণ কীভাবে আমাদের মনমেজাজকে প্রভাবিত করে, তা বোঝা প্রয়োজন। বিষয়টি বুঝতে পারলে আমরা নিজেদের প্রয়োজনমতো বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের ঘ্রাণ নিয়ে শরীর ও মন ভালো রাখতে পারি কিংবা কার্যক্ষমতা বাড়াতে পারি।
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
আবেগ, মেজাজ ও শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়াগুলোর ওপর ঘ্রাণের প্রভাব বোঝার জন্য এর পেছনের বৈজ্ঞানিক কারণগুলো বোঝা প্রয়োজন। ঘ্রাণের সঙ্গে মন ও মস্তিষ্কের সম্পর্কটি ভালোভাবে বুঝতে চাইলে আমাদের অলফ্যাক্টরি সিস্টেম, লিম্বিক সিস্টেম ও নিউরোট্রান্সমিটারের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে হবে।
অলফ্যাক্টরি সিস্টেম
অলফ্যাক্টরি সিস্টেম আমাদের ঘ্রাণশক্তির জন্য দায়ী। আমাদের নাকে রয়েছে অনেক অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টর। আমরা যখন কোনো কিছুর ঘ্রাণ নিই বা গন্ধ শুঁকি, তখন ওই ঘ্রাণ বা গন্ধ সৃষ্টিকারী বস্তুর অণুগুলো আমাদের নাকের অলফ্যাক্টরি রিসেপ্টরগুলোর সঙ্গে বিক্রিয়া করে মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়। পুরো প্রক্রিয়াটির কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের গন্ধ শনাক্ত করতে ও একটি গন্ধের সঙ্গে আরেকটি গন্ধের পার্থক্য করতে পারি। শুধু তা–ই নয়, অতীত অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একেকটি গন্ধের সঙ্গে আমরা নিজেদের আবেগ ও জীবনের বিভিন্ন স্মৃতির সংযোগ খুঁজে পাই।