-6812a8bb4261a.jpg)
সস্তা শ্রমের তিন খাতই অর্থনীতির মেরুদণ্ড
দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘদিন থেকে দুটি বিষয়কে গর্বের সঙ্গে প্রচার করে আসছেন নীতিনির্ধারকরা। একদিকে বলা হচ্ছে-দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে সস্তা শ্রম। অর্থাৎ অর্থনীতি শক্তিশালী হলেও শ্রমিকরা এর সুবিধা কম পাচ্ছেন। দেশের অর্থনীতির তিন চালিকাশক্তি হচ্ছে-কৃষি, গার্মেন্ট ও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। সস্তা শ্রমের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ খাতগুলোকেই অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলা হয়। তিন খাতের সঙ্গেই শ্রমিকদের সম্পর্ক বেশি। অর্থাৎ শ্রমিকরাই অর্থনীতি টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু আজ সেই শ্রমিকরা ভালো নেই। কম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য অন্যতম সমস্যা। দিন দিন বৈষম্য দানবীয় রূপ ধারণ করছে। এসব সমস্যা নিরসনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। কিন্তু প্রতিবছর মে দিবস এলেই শ্রমিকদের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর সবাই ভুলে যায়। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জাতীয় মজুরি কমিশন গঠিত হয়নি। সবকিছু মিলে শ্রমিকরা যে টাকা আয় করছেন, তা দিয়ে সংসার একেবারেই চলছে না। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের অভাব এবং দেশের অর্থনৈতিক নানা সংকটে তারা প্রতিনিয়ত কাজ হারাচ্ছেন। ফলে বাড়ছে বেকারত্ব। পণ্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, তাতে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। ১৪২টি খাত-উপখাতের মধ্যে ৮৪টিতেই ন্যূনতম মজুরি নেই। অন্যদিকে করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এতে দুর্দিন যাচ্ছে প্রবাসী শ্রমিকদেরও। অর্থাৎ আগামীতে ভালো দিন আসছে, এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মতো শ্রমঘন শিল্পপ্রধান দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার হিসাবে দেশে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ বেকার। কিন্তু সরকার বলছে, বেকার মাত্র ২৬ লাখ। পর্যায়ক্রমে আরও কমছে।
শ্রম আইন ২০০৬ সালের ২(৬৫) ধারায় বলা হয়েছে, শ্রমিক হলো ওই ব্যক্তি, যিনি তার চাকরির শর্ত পালন করে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা শিল্পে সরাসরি কাজে নিযুক্ত। এছাড়া ঠিকাদারের মাধ্যমে মজুরি বা অর্থের বিনিময়ে দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক অথবা কেরানিগিরির কাজে নিয়োজিতদেরও শ্রমিক বলা যাবে। মূলত শ্রমিকদের দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো-অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) যেমন : দোকানপাট, ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কৃষিকাজ ইত্যাদিকে বিবিএস চিহ্নিত করেছে। আর আনুষ্ঠানিক (ফরমাল) ক্ষেত্র হলো-সরকারি অফিস-আদালত, বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।