সরকারি কর্তৃত্ব, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও মুক্তশিক্ষার স্বাধীনতা

বিডি নিউজ ২৪ সৌমিত জয়দ্বীপ প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:২৬

দ্বিতীয়বারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বিশ্বকে নিজের কলমের খোঁচায় তটস্থ করে ফেলেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর কোনো কোনো উদ্যোগ রীতিমতো ‘গ্লোবাল ফেনোমেননে’ রূপ নিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যেই। তবে, ট্রাম্পের নতুন ধামাকার খপ্পরে এবার পড়েছে শিক্ষা, বিশেষত উচ্চশিক্ষা।


যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত পরিচিতদের বরাতে খবর পাচ্ছি, নানা টানাপোড়েন চলছে, যেগুলোর অনেক কিছুই আগে থেকে অনুমান করা যায়নি। পূর্বের কোনো নথিসংক্রান্ত ঘাটতির জন্য জরিমানা হলেও, এখনকার ট্রাম্প প্রশাসন রীতিমতো ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সাময়িক সময়ের জন্য দেশে ফিরতে আগ্রহী প্রায় সকল অধ্যয়নরতকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো বলছে— যেতে পারেন, কিন্তু ফিরতে পারবেন কি না সেটার ব্যাপারে আমরা কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারব না, সমস্যায় পড়লে সহায়তাও করতে পারব না। ইমিগ্রেশনের বিষয়টি আমাদের হাতে নেই।


ডনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী নীতি আইনসম্মত উপায়ে গমনকারীদেরও যে বেকাদায় ফেলে দিবে, তা অনুনমেয়ই ছিল।


অন্যদিকে, উচ্চশিক্ষায় বাজেট কমেছে, গবেষণা-বরাদ্দ সংকুচিত হয়ে গেছে, অনেকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাকুরি ও গবেষণা কাজের চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে, কনফারেন্স বাতিল হয়ে যাচ্ছে, এমনকি অধ্যয়নরতদের বাহ্যিক কাজের পরিসরও কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিনদেশি দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা কারণ দর্শানো ব্যতীতই বাতিল করা হয়েছে। ঝড়-ঝাঁপটা তাই কম যাচ্ছে না।


মাইক্রো পর্যায়ের সব খবর মিডিয়ায় আসছে না, বাস্তবিক কারণে হয়তো আসা সম্ভবও না। ইতিমধ্যে কলম্বিয়া, জন হপকিন্স, প্রিস্টন, ব্রাউন, কর্নেল ও নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু মাত্রায় তহবিল হয় স্থগিত অথবা বাতিল করার খবর পাওয়া গেছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের আইভি লীগের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড ও বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ফেডারেল সরকারের দ্বন্দ্বের খবরে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গেছে।



২.


রাষ্ট্র বলি কিংবা সরকার, তার বিরুদ্ধে ও বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাঁড়িয়ে পড়ার নজির বৈশ্বিকভাবে কম নয়। মুখ্যত এই ঘটনাগুলো ঘটে শিক্ষার্থীদের তরফে, তাদের আন্দোলনের মারফত। শিক্ষার্থীরা সরাসরি রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যান নানা ইস্যুতে। তবে, এই সংখ্যার তুলনায় নিতান্তই কম হলেও, সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মুখোমুখি অবস্থানও কখনও কখনও ইতিহাসে দেখা গেছে। সেজন্য অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানকর্তা তথা উপাচার্যের মেরুদণ্ড সোজা হতে হয়, নইলে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কম শক্ত কাজ না। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের এই অবস্থানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনগত জায়গা থেকে বোঝাপড়া করার তাই যথেষ্ট প্রয়োজন আছে।


রাষ্ট্র বনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনা করলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনার জন্ম হয়েছে কিংবা অদূর ভবিষ্যতেও হবে, সেটিকে হোয়াইট হাউস বনাম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বিরোধ হিসেবে দেখাই সঙ্গত হবে। এই বিরোধ এত গভীর পর্যায়ে চলে গেছে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সরাসরি কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রাচীন ও ধনী এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অ্যালান এম গার্বার।


উদ্ভূত এ পরিস্থিতির পূর্বাপর ও সমগ্র পরিস্থিতি বুঝতে হলে, ফেডারেল সরকারের সাম্প্রতিককালে নেওয়া কয়েকটি উদ্যোগ এবং এগুলোর ঘটনাসূচি ও পারম্পর্য বিষয়ে আমাদের বিশেষ মনোযোগী হওয়া দরকার।


৩.


হার্ভার্ড তথা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে ফেডারেল সরকারের মাথাব্যথা মূলত বিগত কয়েক মাসে বেশ বেড়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি ডনাল্ড ট্রাম্প ‘এন্টিসেমিটিজম রোধে অতিরিক্ত পদক্ষেপ’ শীর্ষক এক নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এই আদেশের বলে ৯ ফেব্রুয়ারি বিচার বিভাগ একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দেয়। এই টাস্কফোর্সের প্রতিনিধিত্ব করছে ফেডারেল সরকারের সাধারণ সেবা প্রশাসন (জেনারেল সার্ভিস এডমিনিস্ট্রেশন), স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ এন্ড হিউম্যান সার্ভিস) এবং শিক্ষা বিভাগ (ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন)।


মূলত ঐ নির্বাহী আদেশ ও টাক্সফোর্স গঠনের মধ্য দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফেডারেল সরকারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। এক বিবৃতিতে বিচার বিভাগ বলেছে, ‘টাস্কফোর্সের প্রাথমিক অগ্রাধিকার হলো স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলো থেকে এন্টিসেমিটিক নিপীড়নের মূলোৎপাটন করা।’ সামনে থেকে এই টাস্কফোর্সই কাজগুলো করছে, কিন্তু পেছনে সবকিছুই হচ্ছে আসলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কলমের খোঁচায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও