গণতন্ত্রের প্রাণ জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার

কালের কণ্ঠ সাঈদ খান প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৪

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের শান্তি ফিরিয়ে আনার এবং সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ আজ তার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। এই সময়ে জাতিসংঘ একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে পূর্ণ সমর্থন করে এবং বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক ও কান্ট্রি টিমের মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের প্রস্তুতি রয়েছে।’


২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারি এবং একটি ন্যায্য, কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে।

এই লক্ষ্যে আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন উৎসর্গ করেছে।’


গুতেরেস ও ড. ইউনূসের বক্তব্যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধির মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার প্রকাশ পেয়েছে।


বাংলাদেশের সংবিধানের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা, আইনের শাসন, মৌলিক মানবিক মুক্তি ও সাম্যের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, যেখানে জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস।’ এর মূল ভিত্তি হলো জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা।

প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমেই জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশ নেয়। স্থানীয় সরকার থেকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ভোট ছাড়া কোনো স্তরে প্রকৃত গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব নয়।



জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকারের ব্যবস্থা নিশ্চিত রাখা শুধু সাংবিধানিক দায়িত্ব নয়, এটি দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার অপরিহার্য ভিত্তি। প্রত্যক্ষ ভোটের বাইরে যাওয়ার উদ্যোগ গণতন্ত্রের ভিত্তিমূলকে দুর্বল করবে এবং জনগণের আস্থার সংকট তৈরি করবে।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে মজবুত করতে হলে সর্বস্তরে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার অবিচল রাখতে হবে।


স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের মতে, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা বাতিল করে ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচিত সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ভোটাররা শুধু সদস্য বা কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন এবং নির্বাচিত সদস্যরাই নিজেদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান ও মেয়র নির্বাচন করবেন। এই পদ্ধতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী।


চেয়ারম্যান ও মেয়ররা তাঁদের সহযোগী হিসেবে কয়েকজন সার্বক্ষণিক সদস্য মনোনীত করবেন, যাঁরা আলাদা বেতন পাবেন।

বাকিরা আংশিক সময় কাজ করবেন এবং তাঁদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবীরাও নির্বাচন করতে পারবেন। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদে নারী সদস্য নির্বাচনের জন্য তিনটি পৃথক ওয়ার্ড নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে শুধু নারীরা ভোট করবেন।


উপজেলা পরিষদের কাঠামো পরিবর্তন এবং জেলা পরিষদে সরাসরি নির্বাচন চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে জনসংখ্যার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৩৯টি ওয়ার্ড রাখার সুপারিশও করা হয়েছে, যদিও ন্যূনতম ওয়ার্ডের সংখ্যা ৯-ই থাকবে।


এ ছাড়া বাংলাদেশের বিদ্যমান আইনে সরকারি চাকরিতে থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ। অথচ সংস্কার কমিশন সরকারি চাকরিজীবীদের নির্বাচন করার সুযোগের সুপারিশ করেছে, যা বিদ্যমান আইন ও নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও