বিপজ্জনক বাহন চলাচল বন্ধ করা কি এতই কঠিন?

যুগান্তর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪০

একটি জাতি কতটা শিক্ষিত, উন্নত ও সভ্য, তা প্রাথমিকভাবে এবং অতি সহজে নির্ণয় করা যায় সেদেশের রাস্তার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা দেখে আর এক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান কোথায়, তা বোধহয় বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। এদেশের একজন নাগরিক হিসাবে এর জন্য আমি নিজেও লজ্জিত আর সে লজ্জাবোধ থেকেই আজকের এ লেখার প্রয়াস।


ভাবতে অবাকই লাগে, ৫৪ বছর পর জাতি হিসাবে আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি, নীল স্বপ্নগুলো যেন সহসাই ধূসর বর্ণে পরিণত হতে চলেছে। যদি শুধু রাজধানী শহর নিয়েই বলি-কলেজে পড়ার সময় ‘বলাকা’ নামে গাজীপুর-গুলিস্তান রুটে কাঠবডি একটি বাস ছিল, যাতে করে ঢাকা শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছাত্র হিসাবে অর্ধেক ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতাম। অবশ্য এর জন্য বাসের কন্ডাক্টরকে পরিচয়পত্র দেখাতে হতো, কিন্তু এ নিয়ে কখনো কোনো বাগ্বিতণ্ডা দেখেছি বলে মনে পড়ে না। যেমন, কেউ ভাড়া না দিয়ে নেমে গেছে বা কন্ডাক্টর অর্ধেক ভাড়া নিতে রাজি হচ্ছে না ইত্যাদি। সবার মাঝেই নিয়ম মেনে চলার এবং একে অন্যকে শ্রদ্ধা করার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যেত। আর যারা তখন পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করত, বিশেষ করে মনে পড়ে বেসরকারি বিদেশি ব্যাংক ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড’, ‘এইচএসবিসি’ এসব জায়গায় যারা চাকরি করত, তারা স্যুট-টাই পরে এসি বাসে ভ্রমণ করত (তখন ‘প্রিমিয়াম’ নামে উত্তরা-মতিঝিল রুটে একটি এসি বাস সার্ভিস ছিল), যা দেখে অনেকে জীবনের লক্ষ্যই প্রায় পালটে ফেলেছিল যে, পড়ালেখা শেষ করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে ব্যাংকার হবে। বলছিলাম নব্বইয়ের দশকের প্রথমদিকের কথা।



তিন দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে এসে সবকিছু তো আজ আরও অনেক উন্নত হওয়ার কথা ছিল। বিশেষত এ সময়ের মধ্যেই কম্পিউটার, সেলুলার ফোন, ইন্টারনেট, অটোমোবাইল ও আইটি সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যার সুফল হিসাবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষ তাদের কমিউটার সিস্টেমে মেট্রোরেল, পাতালরেল, বুলেটট্রেন, ডাবল ডেকার, ফ্রি এসি বাস সার্ভিস ইত্যাদি উপভোগ করছে। আর আমরা তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উপভোগ করছি ভাঙাচোড়া, লক্কড়ঝক্কড়, ন্যাচারাল এয়ার কমিউটার বাস, যা প্রয়ই যত্রতত্র যাত্রী ওঠানোর জন্য ডগফাইটে লিপ্ত থাকে। আমরাও ফ্রি কমিউটার ট্রেন উপভোগ করি (ভাড়া না দিয়ে), যাতে কোনো সিট, জানালার কাচ, লাইট বা টয়লেট নেই। আর ট্যাক্সিক্যাব ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা তো মিটারের ঝক্কি-ঝামেলা থেকে আমাদের সবসময়ই মুক্তি দিয়ে আসছে ‘কন্ট্রাক্ট’ ভাড়ার মাধ্যমে, যেগুলো বোনাস হিসাবে প্রায়ই রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়, হোক সেটা ইঞ্জিন বিকলজনিত কারণে অথবা ‘দয়াপরবশত’ কিছু অভাবী মানুষকে মোবাইল ফোন, ওয়ালেট, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে ‘দান করার’ ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য! দু-চাকার রাইড শেয়ারে রাস্তার ফার্স্ট লেন দিয়ে যাত্রার অন্যরকম এক অনুভূতি-সবকিছুকে পিছে ফেলে সবার আগে যাওয়ার। আমাদের এ শহরে সর্বশেষ সংযোজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, যার বদান্যতায় আমাদের জীবন হয়েছে গতিময়, সহজলভ্য এবং অনেকটা ছন্দময়ও বটে। আমার আজকের বিষয় ব্যাটারিচালিত এ অটোরিকশা, যাকে আজ রাস্তার অটোসন্ত্রাসী বললেও ভুল হবে না বোধকরি।


ভাড়া ও সময় কম লাগায় আপাতদৃষ্টিতে অনেকের কাছে মনে হতেই পারে, এটা সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী। আবার কোনো ধোঁয়া না থাকায় অনেকের মুখে পরিবেশবান্ধব বলেও শুনে থাকি। যদি সত্যিকার অর্থে তা-ই হতো, তাহলে অন্যদের মতো আমারও কোনো আপত্তি থাকার কথা ছিল না। কিন্তু একটু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে এ বাহনটির প্রতি কারও কোনো দুর্বলতাই আর অবশিষ্ট থাকার কথা নয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও