You have reached your daily news limit

Please log in to continue


শেরে বাংলার রাজনীতি যে কারণে এখনো প্রাসঙ্গিক

২৭ এপ্রিল শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যু দিবস। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার জন্ম হয়েছিল বরিশালে, ২৬ অক্টোবর ১৮৭৩ সালে। সবার অগোচরে ২০২৩ সালে তার সার্ধশত জন্মবার্ষিকী পেরিয়ে এ বছর ১৫২তম জন্ম বছর চলছে। তার মৃত্যুরও অর্ধশত বছরের বেশি অতিক্রান্ত হয়েছে। রাজনীতিতে শেরে বাংলার নিজের দলের এখন অস্তিত্ব নেই। সমাজ ও রাজনীতিতে পরিবারের লোকজনের জোরালো অবস্থান না থাকায় তার জন্ম বা মৃত্যু দিন ঘিরে আচার-অনুষ্ঠান-আয়োজনও হয় খুব কমই। তথাপি তিনি শুধু বাংলাদেশে নন, পুরো উপমহাদেশের রাজনীতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতেও তার রাজনৈতিক মতাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, তিনি যে রাজনৈতিক লড়াই শুরু করেছিলেন, তা শেষ হয়নি।

শেরে বাংলা লড়াই করেছিলেন প্রধানত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি ও তাদের দোসর-তাঁবেদার জমিদার শ্রেণির বিরুদ্ধে অবিভক্ত বাংলার কৃষক ও প্রজাদের পক্ষ নিয়ে। ইংরেজ ও জমিদার, যারা মূলত ছিলেন হিন্দু উচ্চবংশীয়, স্বাভাবিকভাবেই তাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। এ বিরুদ্ধ শক্তিকে পরাজিত করতে শেরে বাংলা হিন্দু-মুসলিম সাধারণ মানুষ, কৃষক, প্রজাকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ছোবলের কারণে তিনি সফল হননি। শ্যামাপ্রসাদকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করতে চাইলেও এক পর্যায়ে শ্যামা বাবু হিন্দু-হিন্দি-ভারতীয় রাজনীতির ত্রিতরঙ্গে বাংলার আপামর মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেন। মুসলিম লীগকেও তিনি পাশে পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারাও মুসলিম-উর্দু-পাকিস্তানের মতাদর্শের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। একাকী শেরে বাংলা পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বার্থের লড়াই চালিয়ে যান আধিপত্যবাদী, মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে। তার তুল্য আরেকজন হলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তিনিও দিল্লি বা পিণ্ডি নয়, বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজনীতিতে আপসহীনভাবে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

শেরে বাংলা হলেন প্রথম ব্যক্তিত্ব, যিনি ব্রিটিশ বাংলার রাজনীতিতে নদী, চর, খেত-খামারের বাংলাকে নেতৃত্বের আসনে নিয়ে আসেন। তার উপস্থিতিতে অবিভক্ত বাংলার কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটি বা বঙ্গীয় আইনসভার মুখ্যমন্ত্রিত্ব পূর্ববঙ্গের হাতের বাইরে কেউই নিয়ে যেতে পারেনি। ফলে হিন্দু মৌলবাদ দিল্লির তাঁবেদারি করে এবং মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা পিণ্ডির আনুগত্য করে শেরে বাংলার বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলা ও ভারতকে ভাগাভাগি করে নিজ নিজ শাসনক্ষেত্র প্রস্তুত করে। যে কারণে শেরে বাংলার রাজনীতি তথা অবিভক্ত বাংলায় প্রজা ও কৃষক এবং পূর্ববঙ্গের প্রাধান্য বিনষ্ট হয়। রাজনীতি চলে যায় হিন্দু ও মুসলিম সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে। তাই, আজও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আঞ্চলিক বা ধর্মীয়-মৌলবাদী আধিপত্যের প্রশ্নে শেরে বাংলা সাহসের বাতিঘর হয়ে বুক উঁচিয়ে দণ্ডায়মান। একইভাবে, মওলানা ভাসানী যাবতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জ্বলন্ত শিখার মতো সমুজ্জ্বল। এ দুই জাতীয় নেতা হলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রগুরু, যারা পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশের স্বাধীন সত্তা ও অস্তিত্বের বীজ বপন করেছিলেন, যা ক্রমে ক্রমে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগ্রামের নানা পর্যায় পেরিয়ে পরবর্তীকালে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে বিকশিত হয়েছে।

ক্রম-অগ্রসরমান বাংলাদেশ স্বকীয় বিকাশের পথে যেসব বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছে, তার মধ্যে আঞ্চলিক আধিপত্য, ধর্মীয় বিভাজন, সাংস্কৃতিক আধিপত্য ইত্যাদি অন্যতম, যার নেপথ্যে কাজ করেছে বাংলা ও উপমহাদেশের পুরোনো বিপদ। শেরে বাংলা জীবনভর এসব বিপদের মোকাবিলা করেছেন। তার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এসব বিপদকে সামাল দেওয়ার শক্তি অর্জন করা জরুরি বলেই আজও শেরে বাংলা একে ফজলুল হককে স্মরণ করা আবশ্যক। কারণ তিনি একাধারে উপমহাদেশের ইতিহাসে এক বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা, সমাজসংস্কারক ও শিক্ষাবিদ হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার রাজনৈতিক দর্শন, প্রগতিশীল চিন্তাধারা ও অসাম্প্রদায়িক অবস্থান আজও প্রাসঙ্গিক, বিশেষ করে যখন সমাজ ও রাজনীতিতে বিভাজন, অসহিষ্ণুতা ও বৈষম্য বেড়েছে।

গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ফজলুল হক ছিলেন কৃষক-মেহনতি মানুষের কণ্ঠস্বর। তিনি পূর্ব বাংলার কৃষক ও মুসলমানদের জন্য যে অবদান রেখেছেন, তা ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী। তার নেতৃত্ব, নীতি ও কর্মকাণ্ড উপমহাদেশের উপেক্ষিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করে। তিনি কৃষকের জমির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ঋণমুক্তির পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৩৬ সালে কৃষকপ্রজা পার্টি গঠন করেন তিনি। জমিদারদের শোষণ, বাংলার কৃষকের দুর্দশা বিশেষত তাদের ঋণের জালে জর্জরিত হওয়া-এসবের প্রতিবাদে তিনি কৃষকপ্রজা পার্টি গঠন করেন। এ দল সরাসরি কৃষকের অধিকার ও স্বার্থ নিয়ে কাজ করেছে। তাছাড়া তিনি ১৯৩৮ সালে ঋণ মোচন আইন প্রণয়ন করে বাংলার কৃষকদের মহাজনি জুলুম থেকে রক্ষা করেন। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তিনি ‘দ্য বেঙ্গল রেন্ট অ্যাক্ট’ সংশোধন করে কৃষকের জমির মালিকানার অধিকার নিশ্চিত করেন এবং ঋণগ্রস্ত কৃষকের জন্য ‘ঋণ মোচন আইন’ প্রণয়ন করেন, যা ছিল কৃষকের শোষণ থেকে মুক্তির এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। শেরে বাংলা জমিদারি প্রথার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কৃষকের পক্ষ নিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে কৃষকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জমিদারদের অনেক ক্ষমতা খর্ব করা হয়। সাধারণ মানুষের নাগরিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশ্নে তিনি ছিলেন অটল ও অবিচল।

সমাজকল্যাণ ও শিক্ষা প্রসারে তার অবদান যুগান্তকারী। তিনি অবহেলিত মুসলিম সমাজে শিক্ষার প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষত পূর্ববঙ্গের বঞ্চিত মানুষকে শিক্ষা ও চাকরি সুবিধা দিতে তার মতো লড়াই আর কেউ করেননি। শেরে বাংলা বুঝতে পেরেছিলেন, পূর্ববঙ্গের মুসলমান সমাজের পশ্চাৎপদতার মূল কারণ শিক্ষার অভাব। তাই তিনি মুসলমানদের জন্য আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা উন্নয়ন এবং সাধারণ শিক্ষায় প্রবেশাধিকারের ওপর গুরুত্ব দেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসাবে মুসলিম শিক্ষার্থীদের সুযোগ বাড়ানোর নানা পদক্ষেপ নেন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জানতেন, ব্রিটিশ ভারতে মুসলমানরা রাজনৈতিকভাবে দুর্বল। ফলে তিনি তাদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন এবং নাগরিক অধিকার, রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট ছিলেন। তিনি বাংলাভাষা ও সাহিত্যচর্চারও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, সংবাদপত্র প্রকাশ ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াও তিনি ছিলেন কবি-সাহিত্যিকদের সুহৃদ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন