You have reached your daily news limit

Please log in to continue


টাকা আর আসমানি উপায়ে আসে না

‘আপনি তো ভাই এক চোখে নুন বেচেন, আর এক চোখে তেল!’

কথাটি শুনে শুরুতে আমি একটু হকচকিয়ে যাই। ভদ্রলোক যে আমার অনেক দিনের পরিচিত, তা নয়। আমি যেখানে ভাড়া থাকি, তার গলিতে মাঝেমধ্যে দেখা হয়। সালাম বিনিময় হয়। তিনি জানেন আমি সাংবাদিকতা করি, টেলিভিশনের টক শোতে মাঝেমধ্যে যাই। শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনি দেখা হলেই আমার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতেন। দেশে বসেও কীভাবে আমি এত সাহসের সঙ্গে কথা বলছি, সেটা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় বারবার আমাকে পরামর্শ দিতেন নিরাপদ কোনো জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য। ৫ আগস্টের পর দেখতাম তাঁকে গভীর রাত পর্যন্ত বন্ধুবান্ধব নিয়ে এলাকায় পাহারা দিতে। পেশাগত কারণে প্রায়ই আমাকে অনেক রাতে ফিরতে হতো। তিনি আমাকে থামিয়ে আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইতেন দেশের ভবিষ্যৎ। খুবই আশাবাদী ছিলেন তিনি। ভাবতেন—দেশে এবার খুবই ইতিবাচক একটা পরিবর্তন আসবে।

কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর সেই আশা অল্প অল্প করে ফিকে হতে থাকল। কিন্তু তার প্রকাশ ঘটল ভিন্নভাবে। আমার সঙ্গে দেখা হলে আগের মতো আন্তরিক ভঙ্গিতে, উৎসাহ নিয়ে কথা আর বলেন না। একদিন কেবল বললেন, ‘আপনি একটু বেশিই সমালোচনা করে ফেলছেন, আর কটা দিন সময় দিতে পারতেন।’ বলতেন বটে, কিন্তু তাঁর কথায় তেমন জোর দেখতাম না। বরং অনেকটা হতাশাই যেন টের পেতাম।

কিছুদিন ধরে বিভিন্ন টেলিভিশন অনুষ্ঠানের আলোচনায় নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অর্থের উৎস নিয়ে আমি কিছু প্রশ্ন তুলেছিলাম। বলেছিলাম—নতুন দল এই যে এত জাঁকজমকপূর্ণ সমাবেশ করল, পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতারের আয়োজন করল, টাকা কোথায় পেল? নতুন সরকার আসার পর এই ছাত্রনেতাদের অর্থনৈতিক অবস্থার, তাঁদের চালচলনের পরিবর্তন খুবই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। সেসব নিয়েও প্রশ্ন করে অনেকে। এক নেতার পকেটে মানিব্যাগ থাকত না, অথচ এখন তিনি এলাকায় যান দেড় শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে। আর এক নেতার আগমন উপলক্ষে তাঁর এলাকায় প্রায় অর্ধশত তোরণ নির্মাণ করা হয়। এক নেতা, কদিন আগেও যিনি জানিয়েছিলেন তাঁরা এতটাই গরিব যে এলাকার সবচেয়ে জীর্ণ ঘরটিই তাঁদের ঘর, সেই নেতা এখন চলাচল করেন দেড় কোটি টাকা মূল্যের গাড়িতে! নেতাটি অবশ্য জানিয়েছেন, জামায়াতপন্থী কোনো এক প্রবাসী ব্যবসায়ী নাকি তাঁকে এই গাড়িটি ব্যবহারের জন্য দিয়েছেন!

এসব প্রশ্ন আমি তুলেছি, তুলছি। সত্যি কথা বলতে কি, এই ছাত্রদের নিয়ে, তরুণদের নতুন এই রাজনৈতিক দল নিয়ে এখন আমি আর অতটা আশাবাদী নই। উদ্যোগটা ভালো ছিল, কিন্তু নেতাদের অনেকেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। লোভের কাছে পরাজিত হয়েছেন। আমার ওই গলির প্রতিবেশী সম্ভবত এখনো কিছুটা আশাবাদী। হয়তো সে কারণেই সেদিন তিনি আমাকে ওই প্রশ্নটা করলেন—আমি কেন কেবল ছাত্রদের দিকেই সমালোচনার দৃষ্টিতে তাকাচ্ছি? একই কাজ তো অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও করছে। তাদের তো প্রশ্ন করছি না? আর তারও চেয়ে বড় কথা, যদি বিভিন্ন ব্যবসায়ী বা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা না নেন, তাহলে রাজনৈতিক দলের ব্যয়ের টাকাটাই-বা আসবে কোথা থেকে?

আসলে প্রশ্নটা আমার কেবল ছাত্র বা তরুণদের প্রতিই নয়। যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁদের সবার প্রতিই। আপনারা টাকা কোথায় পান? নিজের ঠাটবাট বজায় রাখতে, দল চালাতে যে বিপুল অর্থ লাগে, সেটা কোথায় পান? টাকা তো আর আসমানি উপায়ে আসে না। কেউ না কেউ দেন। কে বা কারা দেন? তারও চেয়ে বড় প্রশ্ন—কেন দেন? এই যে দেন, বিনিময়ে তাঁদের আপনারা কী দেন? আপনারা যা দেন, অথবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, সেসব কি আপনার পিতার সম্পত্তি, নাকি জনগণের সম্পদ? আগের সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ‘ঘড়ি-বিলাস’-এর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ভদ্রলোক অনেক দামি দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি পরতেন। রোলেক্স, পাতেক ফিলিপ, কার্টিয়ার—এ রকম। যার কোনো কোনোটির দাম ছিল ৩০-৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত! এ নিয়ে অনলাইন মিডিয়া ‘নেত্র নিউজ’-এ একবার একটা রিপোর্ট হয়েছিল। এরপর অনলাইনে নেত্র নিউজ আর ওপেনই হতো না! সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন—তিনি নাকি সেসব উপহার হিসেবে পেয়েছেন। ভালোবেসে তাঁকে গিফট করা হয়েছে!

৩০ লাখ টাকা দামের ঘড়ি যিনি গিফট করতে পারেন, তিনি নিশ্চয়ই বিশাল ধনাঢ্য কেউ, বড় কোনো ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কি কখনো এমনি এমনি কাউকে কিছু উপহার দেন? তাঁদের সব উপহার কিংবা ভালোবাসাই আসলে কোনো না কোনো ফরমেটে ‘ইনভেস্টমেন্ট’। ৩০ লাখ টাকা আসলে তিনি ইনভেস্ট করেছিলেন। তার বিনিময়ে তাঁরা নিশ্চয়ই ৩০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। এই ৩০ কোটি টাকার প্রকৃত মালিক কিন্তু জনগণ। জনাব ওকা সাহেব গিফট পেয়ে জনগণের সম্পদকে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন দুর্বৃত্তের হাতে। এভাবেই চলে, এভাবেই চলে আসছে। দেখে দেখে আমাদের চোখ পচে গেছে। আমরা ভিন্ন কিছু দেখার আশা করেছিলাম এবার। ভেবেছিলাম, এরা তরুণ, এরা মেধাবী, তাই আগের নেতাদের মতো গড্ডলিকা প্রবাহে এরা হয়তো গা ভাসাবেন না। কিন্তু মানুষের বিপুল সে প্রত্যাশা তাঁরা বহন করতে পারলেন না। ধরা যাক আবদুল হান্নান মাসউদ নির্বাচিত হলেন, সরকারের কোনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে গেলেন। তখন ওই জামায়াতপন্থী প্রবাসী ব্যবসায়ী যদি কোনো আবদার নিয়ে তাঁর কাছে আসেন, ফেরাতে পারবেন?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন