জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে মত–দ্বিমত জানানোর মাধ্যমে প্রথম ধাপের সংলাপ শেষ করলো বিএনপি। রাষ্ট্র পরিচালনায় ঝুঁকি এবং নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করতে পারে মনে করে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলে (এনসিসি) একমত হয়নি দলটি। ডকট্রিন অব নেসেসিটি (প্রয়োজনের নিরিখে) বিবেচনায় রেখে প্রবীণতম তিনজন বিচারকের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রস্তাব দলটির। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের (আইসিটি) মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামীদের নির্বাচনে অযোগ্য করার প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে তারা।
রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিএনপির সঙ্গে জাতীয় সংসদের এলডি হলে সংলাপ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেদিন সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শেষে বৈঠক মূলতবি হয়। এরপর রোববারের বৈঠকও একই বিষয়ে আলোচনার পর মূলতবি হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় আবার শুরু হওয়া বৈঠক দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে চলে প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত। এতে সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করে বিএনপি। সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের সুপারিশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে আলাদা সংস্থা করা, আসন সীমানা নির্ধারনে স্বতন্ত্র কমিশন, সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা ও শপথ ভঙ্গের ক্ষেত্রে পরবর্তী সংসদীয় কমিটি তদন্ত এবং আইসিটি আদালতের মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামী হলেই নির্বাচনে অযোগ্য– এই চারটি বিষয়ে কমিশনের প্রস্তাবে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। তাদের কথা হচ্ছে, প্রথম তিনটি বাস্তবায়ন হলে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হবে এবং কমিশনের স্বাধীন সত্তায় আঘাত আসবে। এ তিনটি বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও চিঠি পাঠানো হয়েছিল।