You have reached your daily news limit

Please log in to continue


ভারতের সাম্প্রতিক দাঙ্গার দায় কার

মধ্য পশ্চিমবঙ্গের বিশালকায় মুর্শিদাবাদ জেলায় গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে তিনজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কার্যত শুরু হয়ে গেল আগামী বছর রাজ্যের অষ্টাদশ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। যেকোনো রাষ্ট্রে, রাজ্যে বা জেলায় আলোচনার জন্য যখন মধ্যপথ খোলা থাকে না এবং রাজনীতি গোষ্ঠীকেন্দ্রিক—ইংরেজিতে ‘সেক্টেরিয়ান’ হয়ে দাঁড়ায়, তখন হিংসা ও ধ্বংস অনিবার্য। বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক এক বছর আগে, পশ্চিমবঙ্গকে সেই হিংসার জন্য প্রস্তুত হতে হবে, ইতিমধ্যেই যা শুরু হয়ে গেছে। শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

ইংরেজিতে আরও একটি শব্দবন্ধ আছে, ‘আন-আইডেন্টিফায়েড মিসক্রিয়েন্টস’, অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। এই শব্দবন্ধ না থাকলে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রশাসন চালানো যেত কি না, তা গবেষণার বিষয়। যা হবে সেটাই ‘অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী’র ওপর চাপিয়ে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। কারও দায় নেই, সব দায় ‘অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী’র। এই পরিচয়হীন দুষ্কৃতী যদি না থাকত, তাহলে বলতে হতো যাবতীয় দাঙ্গা-হাঙ্গামা কে ঘটাচ্ছে। সে কোন দল, গোষ্ঠী বা সংগঠনের প্রতিনিধি, আর কেনইবা তার পরিচয় গোপন করে সমাজের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করে চলেছে। প্রশাসনের সমস্যাও বাড়ত।

মুর্শিদাবাদে ১১ ও ১২ এপ্রিল দাঙ্গা ও হত্যার পর আবার সেই ‘অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী’ মহাশয়ের কথা শোনা গেল। এই দুষ্কৃতকারীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া দুষ্কর। গত ৩০ বছরের সাংবাদিক জীবনে ভারতের ছোট-বড় গোটা পনেরো দাঙ্গার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে বুঝেছি, কেন দাঙ্গা হয়েছিল এবং কে বা কারা ঘটিয়েছিল, তা কোনো সাংবাদিকের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। কারণ, এর জন্য যতবার ঘটনাস্থলে যাওয়া প্রয়োজন বা যত অর্থ ব্যয় করে দীর্ঘ তদন্ত করা প্রয়োজন, তা এককভাবে একজন সাংবাদিক বা দক্ষিণ এশীয় সংবাদ সংস্থার পক্ষে করা সম্ভব নয়। একমাত্র প্রশাসন বা হয়তো বড় বেসরকারি নাগরিক সংগঠন এ কাজ করতে পারে, যদি তারা রাজনৈতিক চাপ অগ্রাহ্য করতে পারে, যা বর্তমানের দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার।

দাঙ্গার পর সাধারণত কী হয়

সাধারণত দেখা যায়, এ ধরনের ঘটনার পর ভারতে স্থানীয় মানুষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করেন অর্থাৎ হিন্দুরা মুসলমানের দোষ দেন এবং মুসলমানরা হিন্দুদের দোষ দেন। পশ্চিমবঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতেও এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ‘পার্টি সোসাইটি’ হওয়ার কারণে এখানে বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসের দোষ দেয় এবং তৃণমূল বিজেপির দোষ দেয়। এভাবেই দাঙ্গার দায় নির্ধারণের ঐতিহ্য অব্যাহত। সাংবাদিকেরা সাধারণত ঘটনাস্থলে এক বা বড়জোর দুই দিন থাকেন, ছবি তোলেন এবং কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর সব দিক বাঁচিয়ে একটা প্রতিবেদন লেখেন।

স্বাভাবিকভাবেই এর মধ্যে নানা ফাঁক থাকে, যেটা এক বা দুই দিনে ধরা সম্ভব হয় না। মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রেও তা–ই। মনে রাখা প্রয়োজন, এ ধরনের ঘটনা যখন ঘটে, তখন হঠাৎ ঘটে না। একটা প্রস্তুতি থাকে। সেই প্রস্তুতি কে নিয়েছিলেন ও কেন নিয়েছিলেন, সেটা সাধারণত পাঠকের কাছে অধরাই থেকে যায়। প্রশাসন ‘অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী’কে দোষ দেয় এবং বাধ্য হয়েই মানুষকে সেটা মেনে নিতে হয়।

কিন্তু রাজনৈতিক দলের এভাবে মেনে নিলে চলে না। তাদের অপর পক্ষকে দোষ দিতে হয় এবং সেভাবেই মুর্শিদাবাদে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষ দিচ্ছে। ধরে নেওয়া যেতেই পারে, এভাবেই বেশ কিছু ঘটনা আগামী এক বছরে ঘটবে এবং দোষারোপের বহর বাড়বে। যাদের জেতার সম্ভাবনা নেই (বাম ফ্রন্ট এবং কংগ্রেস), তারা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ—দুই পক্ষকেই দোষ দেবে।

কিন্তু দাঙ্গার দায়িত্ব কার

এর বাইরে অর্থাৎ অজ্ঞাতপরিচয় কারও ওপর দোষ চাপিয়েও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রশ্নটি হলো নির্দিষ্ট অঞ্চলে, রাজ্যে বা ওই দেশে কে বা কারা দাঙ্গার সময়ে ক্ষমতায় ছিলেন, তারা কি দায় এড়াতে পারেন? গুজরাট, উত্তর প্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গ—ভারতের সব রাজ্যের ক্ষেত্রেই এই প্রশ্ন তোলা যেতে পারে এবং নিশ্চিতভাবে কোথাওই শাসক দল দায়িত্ব এড়াতে পারে না। উত্তর প্রদেশ, গুজরাটে যেমন বিজেপি পারে না, তেমনই পশ্চিমবঙ্গে পারে না তৃণমূল কংগ্রেস।

ওপরের অনুচ্ছেদ থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে যে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত সরকার মুর্শিদাবাদের ঘটনার জন্য দায়ী। এর কারণ শুধু এটা নয় যে ২০১১ সাল থেকে তারা রাজ্যে ক্ষমতায় আছে। অন্য কারণ আছে।

মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ মুর্শিদাবাদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রায় প্রত্যেকেই তৃণমূলের নেতা। বিজেপির প্রভাব সামান্যই। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব কতটা গভীর, সেটা দেখে নেওয়া যাক। গত সপ্তাহান্তের সহিংসতার কেন্দ্রস্থল জঙ্গিপুর মহকুমাসহ গোটা মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল ২০২৪ সালে তিনটি সংসদীয় আসনের তিনটিতেই জিতেছিল। জেলার ২২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০টি বর্তমানে শাসক দলের দখলে; জেলার ২৬টি পঞ্চায়েত সমিতির সব কটি তৃণমূলের। একইভাবে মোটামুটি ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় প্রতিটি তৃণমূলের নিয়ন্ত্রণাধীন। শহরাঞ্চলের ৮টি পৌরসভার মধ্যে ৭টি তৃণমূলের। যে পৌরসভাটি (ডোমকল) দখলে নেই, সেটিও প্রশাসক হিসেবে চালাচ্ছেন তৃণমূলের এক বিধায়ক। অর্থাৎ মুর্শিদাবাদের সংঘাতের জন্য বিজেপিকে দায়ী করা যাচ্ছে না। কারণ, নির্বাচনী রাজনীতিতে গেরুয়া পার্টির প্রায় কোনো অস্তিত্বই জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য মুর্শিদাবাদে (৭০ লাখের ওপর) নেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন