পরিবেশ ও সমাজের ক্ষতি করে কোনো প্রকল্প নয়

www.ajkerpatrika.com মৃত্যুঞ্জয় রায় প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৭

দেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়ছে। নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ফলে সেতুর উজান ও ভাটি এলাকায় যে কী পরিমাণ পলি জমে নদীর বাস্তুতন্ত্র ও নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা কয়েকটি সেতুর ওপর দাঁড়িয়েই সহজে বোঝা যায়।


কোনো দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সরকার সব সময়ই বলে আসছে, পরিবেশ ও সমাজের ক্ষতি করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। এ জন্য যেকোনো প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন ও গ্রহণের আগে সে প্রকল্পের উপযুক্ততা বা যথার্থতা সঠিকভাবে যাচাই করা যেমন প্রয়োজন, তেমনি সেসব প্রকল্পের পরিবেশ ও সামাজিক প্রভাবগত সমীক্ষাও বাধ্যতামূলক। বিশেষ করে প্রকল্পটি গ্রহণের আগে সে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সেখানকার এবং রাষ্ট্রের সমাজ ও পরিবেশের কী ক্ষতি হতে পারে, কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাবের ঝুঁকি রয়েছে, সেগুলো নিরূপণ করার বিধান রয়েছে। নেতিবাচক প্রভাবগুলো যদি লঘু ও প্রশমনযোগ্য হয়, তাহলে সেসব প্রভাব নিরসনের জন্য প্রকল্প কাঠামোর ভেতরে সেসব ঝুঁকি নিরসনের ব্যবস্থা রেখেই উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করার গাইডলাইনে নির্দেশনা রয়েছে।


কিন্তু বাস্তবে প্রকল্প গ্রহণে কখনো কখনো অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করে প্রকল্প অনুমোদন করাতে গিয়ে এবং রাজনৈতিক চাপ বা ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে সেসব প্রকল্পের দলিলে এ বিষয়গুলোকে শুধু নিয়ম রক্ষার বিষয়ে পরিণত করা হয়, প্রকৃতপক্ষে যথাযথ ফিজিবিলিটি স্টাডি ও পরিবেশগত সমীক্ষা ছাড়াই অনেক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। অনেক সময় পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে যথাযথভাবে পরিবেশগত ও অবস্থানগত ছাড়পত্রও গ্রহণ করা হয় না। এমনকি আর্থিক বিষয়ের খুঁটিনাটিতেও অনেক গলদ থেকে যায়। এতে পরবর্তী সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে বেশ কিছু সমস্যার উদ্ভব হয়। এ কারণে পরবর্তী সময়ে প্রায় সব প্রকল্পেরই ডিপিপি বা টিএপিপি সংশোধন করা আবশ্যিক হয়ে পড়ে।



প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বর্তমানে এ দেশে পরিবেশগত ও সামাজিক বিষয়াবলির চর্চা এবং প্রত্যাশিত অবস্থার মধ্যে মোটাদাগে যেসব গ্যাপ বা ব্যবধানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলো হলো:


১. কৃষকেরা এখনো পরিবেশবান্ধব কৃষিকাজের ভালো চর্চাগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন নন। তাঁদের কম সচেতনতার কারণে খামারের স্থানে পরিবেশদূষণ, বিশেষ করে বায়ু, ভূমি ও পানিদূষণ এখনো ঘটছে। কৃষি আবর্জনা এবং সার এখনো সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে না। কৃষিকাজে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় কৃষকেরা এখনো দক্ষ নন। কৃষিজমিও অ-কৃষি উদ্দেশ্যে স্থানান্তরিত হচ্ছে। নির্মাণস্থলে নানাভাবে পরিবেশদূষণ ঘটছে, বিশেষ করে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, ধূলিদূষণ, নির্মাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে দূষণ কমাতে বা প্রতিরোধ করতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।


২. প্রকল্পগুলোতে ও প্রতিষ্ঠানে অবস্থান-নির্দিষ্ট পরিবেশগত ও সামাজিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা না থাকায় বিষয়টি অগ্রাহ্য করা হয় বা এড়িয়ে যাওয়া হয়। এ কারণে অবকাঠামো নির্মাণস্থলে কিছু পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নকালে ও পরবর্তী সময়ে তার প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।


৩. প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় নারীদের অংশগ্রহণ এখনো কম দেখা যাচ্ছে এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও তা ভোগের/অ্যাকসেসের ক্ষেত্রেও নারীরা পিছিয়ে রয়েছে।


৪. নারী শ্রমিকদের জন্য কোনো ন্যূনতম মজুরি আইন নেই, যাতে একই কাজের জন্য সমান মজুরির ভিত্তিতে কৃষি বা অবকাঠামোগত কাজে নারী কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা যায়। এ দেশে শ্রম বিধিমালা থাকলেও শ্রমিকদের কল্যাণসাধন সেভাবে করা হচ্ছে না।


৫. এমনকি যৌন হয়রানির শিকার নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভয়ে কোনো অভিযোগও করেন না। দেশে অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত হলেও ভুক্তভোগী অভিযোগকারীরা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন নন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও