রুশ বাহিনীর হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাঁর এক সহযোদ্ধা মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) বাড়ি উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আকরাম ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে পরিবারটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্থানীয় লোকজন ও নিহত তরুণের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তাঁর বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাঁকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।
নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তাঁর ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। আকরামের লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।
আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।