
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির ‘অসন্তুষ্টি’ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট বিতর্ক
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের কাছে আলোচনা নিয়ে তাদের অসন্তুষ্টির কথা স্পষ্ট করে বলেছেন।
মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বেরিয়ে ফখরুল যখন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন তার চোখেমুখে স্পষ্ট ছিল হতাশা।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় মির্জা ফখরুল একটি নাতিদীর্ঘ লিখিত বক্তব্যও দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, “যে কোনো রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তার সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা আপনাকে সমর্থন জানিয়েছি এবং আপনার ওপরই আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।”
আলোচনাটা বক্তব্যের এখানটাতেই। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই আলোচনার পরেও নির্বাচনের ডেটলাইন না পাওয়া বিএনপিকে হতাশ করেছে। বিএনপি মহাসচিব বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়, তিনি সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের ডেটলাইন আমাদেরকে দেননি। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে তিনি নির্বাচন শেষ করতে চান… আজকে আমাদের তিনি এটা বলেছেন। আমরা স্পষ্ট করেই বলেছি, ডিসেম্বরের যে কাট অফ টাইম, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন যদি না হয়, তাহলে দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সামাজিক পরিস্থিতি, সেটা আরও খারাপের দিকে যাবে। সেটা তখন নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।”
একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধি-বিধান সংস্কারে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে যেসব পরিবর্তন জরুরি, তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই বৈঠকে বিএনপি মূলত যে বার্তাটি দিতে চেয়েছে সেটি হলো, তারা মনে করে নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত দেশের বিদ্যমান সংকট কাটবে না। দেশের বিভিন্ন সেক্টরে যে বিশৃঙ্খলা চলছে, রাজনৈতিক সরকার ছাড়া সেগুলো মোকাবিলা করা কঠিন। তাছাড়া বিএনপি মনে করে, যে ভোটাধিকার থেকে বিগত সরকার দেশের মানুষকে বঞ্চিত রেখেছিল, যত দ্রুত সম্ভব সেই অধিকার ফিরিয়ে দেয়া প্রয়োজন।