শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ: আমাদের ঐতিহ্যে আমাদের ইতিহাসে

প্রথম আলো ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪৯

৯ এপ্রিল ১৯৭১ সাল। সিলেট শহরে চলছে প্রচণ্ড যুদ্ধ। পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটায় কিছুদিনের জন্য মুক্ত সিলেটের জেল ভেঙে রাজনৈতিক ও অন্যান্য কয়েদিকে ছাড়ানো হলো।


সবাই তখন কারফিউ ভাঙার কারণে সিলেট ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে লাগলেন। প্রায় জনশূন্য সিলেটে তখন পাকিস্তানি সেনাদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ আহত মানুষ দিয়ে সিলেট মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল পরিপূর্ণ। মেডিকেল কলেজের সার্জারির প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালটিকে কয়েক দিন থেকে সারাক্ষণ আগলে ধরে আছেন। সবাই চলে গেছে শুধু একজন তরুণ ডাক্তার শ্যামল কান্তি লালা তাঁর পরম শ্রদ্ধেয় অধ্যাপককে রেখে কোথাও যাবেন না। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কোরবান আলী সারাক্ষণ আহত মানুষকে তুলে আনছেন। নার্স মাহমুদুর রহমান আর ওয়ার্ড বয় মুখলেসুর রহমান অপারেশন থিয়েটারে আর ওয়ার্ডে অধ্যাপককে সহায়তা করতে ব্যস্ত। ডা. শামসুদ্দিন বিপদ বুঝে আগেই অন্য নার্সদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে স্বল্পসংখ্যক সাহসী মুক্তিযোদ্ধা বাঙালি সৈনিকেরা পাকিস্তানি বিশাল বাহিনীর চাপ সহ্য করতে না পেরে সিলেট ত্যাগ করতে হলো।


তখন পাকিস্তানি সৈন্যরা আবার ৯ এপ্রিল শহরে ঢুকেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশ করল। অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে আনল অধ্যাপক শামসুদ্দিন আহমেদ ও তার সহকর্মীদের আর কিছু রোগীর; তারপর সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতরেই গুলি করে তাঁদের হত্যা করল। শুধু সেই ঘটনার সাক্ষী হয়ে মরার ভান করে বেঁচে গেলেন গুলিবিদ্ধ মুখলেসুর রহমান। হাসপাতালে আহত মানুষের সেবারত চিকিৎসক হত্যা শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে নয়, বিশ্বের যুদ্ধের ইতিহাসে মানবতার বিরুদ্ধে একটি বড় জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করল হানাদার বাহিনী।


ডা. শামসুদ্দিনের এই কর্তব্যবোধ, মানবতাবোধ, অসম সাহসিকতা, পেশার উৎকর্ষ ও সম্মান বৃদ্ধির জন্য আজীবন ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। তাই তিনি হয়ে উঠলেন একটি কিংবদন্তি। অবিভক্ত সিলেটের করিমগঞ্জের বদরপুরে জন্ম। সিলেটে স্কুল ও কলেজে পড়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৪৬–এ পাস করে নতুন পাকিস্তানে চলে আসেন ভেঙে পড়া চিকিৎসা আর মেডিকেল শিক্ষাকে উন্নত করতে। সরকারি চাকরির জন্য যখন যেখানে বদলি হয়েছেন, সেখানেই রেখেছেন তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান।


জাতীয় পর্যায়ে ও জেলা পর্যায়ে যখন যেখানে গেছেন, সেখানে মানুষ এবং সমাজ উন্নয়নকে সংঘটিত করেছেন। তিনি তরুণ বয়সে ঢাকায় থাকার সময় ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হয়ে তৈরি করলেন পূর্ব পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। যাত্রা শুরু হলো চিকিৎসকদের দিকনির্দেশনা আর পেশার উন্নতির জন্য ন্যায্য সংগ্রাম। পশ্চিম পাকিস্তান তখন তাদের ডাক্তারদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠাত। নতুন রাষ্ট্রে বৈষম্য শুরু হলো সব ক্ষেত্রে। প্রতিবাদ করতে থাকলেন প্রতি পদে। তাই এরপর তাঁকে আর ঢাকায় রাখা ঠিক হবে না। তাতে থামল না তাঁর কণ্ঠ। কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম পাঠানো হতো। ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সবখানেই গড়ে তুলতেন মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন আর পেশার উন্নতি ও রোগীদের এবং সবচেয়ে উত্তম ও মানবিক সেবার জন্য তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও