
ঈদবাজারে বেতন-বোনাস, রেমিট্যান্স, চাহিদার চাপ ও মানুষের মর্যাদা
গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে প্রথম ঈদ পালিত হতে যাচ্ছে। স্বভাবতই একটা বিশেষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশে। এ অবস্থায় এবারের ঈদুল ফিতরে হচ্ছে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এ নিবন্ধ লেখার সময় রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে মানুষের উপস্থিতি কমে এসেছে। ঈদের কেনাকাটা শেষদিকে বলে তাদের চলাচলও কম। তবে চাঁদরাতে একদল মানুষ উৎসাহ নিয়ে কেনাকাটায় বেরুবে। সব শ্রেণির মানুষই যার যার মতো করে শামিল হবে ঈদ উদযাপনে। এর অপরিহার্য অংশ হলো নতুন সাজপোশাক ও উন্নত মানের খাওয়াদাওয়া। জাকাত বিতরণ, উপহার প্রদান আর স্বজনদের আপ্যায়নও এর অংশ। বাংলাদেশি যারা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছেন, তারাও দেশে স্বজনদের সঙ্গে এ উৎসবে শামিল হবেন। তাদের একাংশ দেশে এসে থাকেন এ সময়ে। আরেক অংশ যোগ দেন ভার্চুয়ালি। ওইসব দেশে একদিন আগে ঈদ পালিত হলেও তারা চেয়ে থাকবেন রেখে আসা স্বদেশের দিকে।
ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা এবার বিপুল অংকের আয় বা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বিদায়ী মাস মার্চে রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছে। হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে এটা এক মাসে তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে, এটাও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছিলেন। একে বলা যেতে পারে এবারের ঈদের সবচাইতে বড় ঘটনা। এর তাৎপর্যও বিরাট। এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। হিসাব পদ্ধতির তারতম্যে রিজার্ভ নিয়ে দুই-তিন রকম চিত্র অবশ্য পাওয়া যায়। তবে রক্ষণশীল হিসাব পদ্ধতিতেও রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলার। এটা সন্তোষজনক না হলেও স্বস্তিকর। রেমিট্যান্সের এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে এটা সন্তোষজনক হতেও সময় লাগবে না। নিকটেই আরেকটি ঈদ রয়েছে। তখনও কম রেমিট্যান্স আসবে না। ঈদ-পার্বণ বাদেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেগবান রাখতে আর কী কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা বাড়ছে। আমরা দেখতে চাই– রিজার্ভ ক্ষয়ের ধারা বন্ধ হয়ে এক্ষেত্রে যেন বিরাজ করে স্বস্তি।