আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ যখন রাজনীতির এজেন্ডা

প্রথম আলো জাহেদ উর রহমান প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৩

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে না, সেটা আমার কাছে অন্তত স্পষ্ট হয়েছিল ২০ নভেম্বর, বুধবার। সেদিন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে কোনো দল বা সংগঠনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী এবং বিচার করা যাবে না, যদিও যে আইন উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হয়েছিল, তাতে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে বিচারের বিধান রাখা হয়েছিল। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশের মাটিতে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আওয়ামী লীগ দল হিসেবেই মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হয়েছিল।


অন্য দুটি আইনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পথ থাকলেও আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আইসিটি আইন থেকে সংগঠন কিংবা দলের বিচারের ধারাটি বাদ দিয়ে সরকার আসলে নভেম্বর মাসেই বার্তা দিয়েছিল যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পথে পথে তারা হাঁটছে না। প্রধান উপদেষ্টা কয়েক দিন আগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করার ব্যাপারে তাঁর সরকারের অবস্থানের কথা চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেন।


প্রধান উপদেষ্টা এ ধরনের বক্তব্য আগেও দিয়েছিলেন, কিন্তু এবার তাঁর বক্তব্যের পরপরই দুটি ঘটনা ঘটল, যেগুলো এই পরিস্থিতিকে একেবারে ভিন্ন দিকে নিয়ে গেছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁদের কয়েকজনকে ক্যান্টনমেন্টে এক বৈঠকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তৈরি করে নির্বাচনে আনার পক্ষে অবস্থান নিতে বলা হয়। ঠিক কারা ক্যান্টনমেন্টে জনাব হাসনাতের সঙ্গে বসেছিলেন, সেটা তিনি স্পষ্টভাবে না বললেও পরদিন এনসিপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য তার বেশ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। সাম্প্রতিক এক বক্তব্যে সেনাপ্রধান ইনক্লুসিভ নির্বাচনের যে কথা বলেছেন, তার মাধ্যমে তিনি আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়েই নির্বাচন করার বিষয়টিকেই বুঝিয়েছেন বলে মনে করেন হাসনাত। অনুমিতভাবেই তাঁর ক্যান্টনমেন্টের বৈঠকের সঙ্গে সেনাপ্রধানকেই সবাই যুক্ত করেছেন।



এই স্ট্যাটাসের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার খুব ছোট্ট একটি বক্তব্য শেয়ার করেন হাসনাত, যা পরবর্তী সময়ে আমরা বিস্তারিতভাবে দেখতে পাই একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সেই উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারে। যে বক্তব্যটা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়, সেটা হচ্ছে আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করছেন, সেনাপ্রধান আমাদের প্রধান উপদেষ্টা পদে ইউনূসকে পছন্দ করার ক্ষেত্রে তীব্রভাবে বিরোধিতা করেছেন। এবং আসিফ মাহমুদের ভাষায় শেষ সময় পর্যন্ত তিনি এ ব্যাপারে কনভিন্সড ছিলেন না; বরং ‘বুকে পাথরচাপা দিয়ে’ সিদ্ধান্তটি মেনে নিয়েছিলেন। আসিফের বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে আলোচনা সরিয়ে রাখলে এই প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে সরকারের উপদেষ্টা পদে থাকা একজন মানুষ ঠিক এই মুহূর্তে সেনাপ্রধানকে তীব্র চাপে ফেলার মতো একটা বক্তব্য কেন সামনে আনলেন?


খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঘটা এই দুটি ঘটনাকে সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে শুরু করে এমন একটি গোষ্ঠী, যারা দীর্ঘদিন থেকে সেনাপ্রধানকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করার জনমত তৈরি করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। শুধু সেটাই নয়, এই দফায় জনগণকে সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার আহ্বানও জানায় তারা।


এটা সত্য যে শুধু সাম্প্রতিক সময়ে নয়, শেখ হাসিনার পতন এবং পালিয়ে যাওয়ার পর রয়টার্সের সঙ্গে সাক্ষাৎকারেও সেনাপ্রধান নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আলাপ করেছেন। সাম্প্রতিক বক্তব্যে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের কথা বলেছেন। এগুলোকে কেউ রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কিংবা নিদেনপক্ষে প্রভাব রাখার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। যেটা অযৌক্তিকও নয়। তাই সেনাপ্রধানের কিছু যৌক্তিক সমালোচনা হতেই পারে। কিন্তু এ ঘটনার আগেও সেনাপ্রধানকে সরানোর একটি প্রেক্ষাপট তৈরির চেষ্টা কার্যকর ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও