ট্রাম্পের 'হানিমুন পিরিয়ড' শেষ

প্রথম আলো সাইমন টিসডাল প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪২

অজ্ঞতা, ভুল, ইচ্ছাকৃত অন্ধত্ব এবং আত্মঘাতী ভবিষ্যদ্বাণী। এগুলোই হচ্ছে ট্রাম্পের সব সিদ্ধান্তের ভিত্তি। আর সেসবের পরিণামও তাঁর ঘোষিত উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্টরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ধাতস্থ হতে কিছুদিন সময় পান। কিন্তু ট্রাম্প নিজের কাজের ফল হিসেবেই হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ‘হানিমুন পিরিয়ড’ পেলেন।


মার্কিন শুল্কনীতি ট্রাম্প বদলে দিচ্ছেন ব্যাপকভাবে। সেই বদল হিমবাহে ধাক্কা লাগা টাইটানিক জাহাজের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে ডোবাবে বলে মনে হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের ওপর তাঁর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থাগুলো ইতিমধ্যে শেয়ারবাজারে ধস নামিয়েছে। শঙ্কা হচ্ছে মারাত্মক মূল্যস্ফীতির। অথচ ট্রাম্প তাঁর ভোটারদের এসবের ঠিক উল্টো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।


ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে আবার মহান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বড় করার নয়। কিন্তু তিনি কানাডা আক্রমণের হুমকি দিলেন। কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য করার ইচ্ছা জাহির করলেন। কানাডা স্বাভাবিকভাবেই খুব ক্ষুব্ধ। তারা মার্কিন পণ্য বর্জন করছে এবং পাল্টা শুল্ক আরোপ করছে। ট্রাম্প একাই নতুন জীবন দিয়েছেন ঝামেলায় পড়া জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল পার্টিকে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক প্রধান মার্ক কার্নির নেতৃত্বে দলটি এবার ট্রাম্পবিরোধী ইস্যুতে নির্বাচনে জেতার ভালো সুযোগ তৈরি করেছে। অথচ পরিকল্পনাটা এমন ছিল না।


এদিকে গ্রিনল্যান্ডের ভোটাররা পুতিন-স্টাইলের সাম্রাজ্যবাদী দখলের প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ হয়ে গত সপ্তাহে ট্রাম্পকে দূরে থাকতে বলেছেন। তাঁরা স্বাধীনতা নিয়ে নিশ্চিত নন। তবে তাঁরা মার্কিন (বা ড্যানিশ) নিয়ন্ত্রণ স্পষ্টভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছেন।



ট্রাম্পের ইউক্রেন নীতিও আরেকটি বিপর্যয়। রাশিয়া হামলাকারী। অথচ ট্রাম্প শাস্তি দিচ্ছেন ভুক্তভোগীকে। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছে কেবল কিয়েভের ওপর। ফলে ভ্লাদিমির পুতিন আরও আক্রমণ বাড়ানোর সাহস পাচ্ছেন, বিশেষ করে কুরস্কে। আর ট্রাম্পকে বোকা বানিয়ে সময় নিচ্ছেন।


এই অন্যায় শাস্তির ফল হবে রাশিয়ার অযাচিত পুনর্বাসন, পুতিনের যুদ্ধাপরাধের জন্য কার্যত ক্ষমা, জোর করে দখল করা ভূখণ্ড ধরে রাখার একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ বিভাজন। প্রশ্নটা আবার উঠছে—এটা কি সত্যিই অনিচ্ছাকৃত? ট্রাম্প কি কারও আজ্ঞাবহ, কেজিবির এজেন্ট, নাকি নিছক নির্বোধ। গত সপ্তাহে এ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সম্ভবত তিনি জানেনই না তিনি কী করছেন। অথবা আদৌ কোনো পরোয়া করেন না। তা না হলে শুল্ক নিয়ে নিজের যুক্তি প্রমাণ করতে গিয়ে বৈশ্বিক মন্দা ডেকে আনার মানে কী? বা তিনি কীভাবে ভাবেন যে গাজায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জাতিগতভাবে উচ্ছেদ করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে?


ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য চীন। আর তিনি মস্কোকে বেইজিং থেকে আলাদা করতে চাইছেন। এটাও এক উল্টো ভাবনা। এই দুই রাষ্ট্রের লক্ষ্য এক—পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বিশ্বব্যবস্থাকে দুর্বল করা ও দখল করা। ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়, ট্রাম্প তাদের এই লক্ষ্যে সাহায্য করছেন।


ট্রাম্প ও তাঁর অপরিণত উপদেষ্টারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারেন যে রাশিয়াকে এমন এক লজ্জাজনক বিজয় উপহার দিলে শান্তি আসবে না। বরং ভবিষ্যতে ন্যাটোর মিত্রদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন সংঘাত তৈরি হবে। এই নজির বিশ্বব্যাপী আরও সব আইন ভাঙার জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। হয়তো আসলেও তারা বুঝতেই পারছে না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও