বাংলাদেশে গুতেরেস এবং আমাদের সংস্কার

প্রথম আলো মাহমুদুর রহমান মান্না প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৫২

হাতিরঝিল পার হওয়ার আগেই মুঠোফোনের মেসেজে দেখলাম লেখা, ‘মিটিং অ্যাট ১.০০ পিএম।’ বেশ অবাক হলাম। এ রকম তো হওয়ার কথা নয়। এটা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সভা। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন (১৫ মার্চ) বেলা ১টা ৩০ মিনিটে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও এ কথা জানানো হয়েছে এবং আমাকে কনফার্ম করতে বলা হয়েছে। আমি কনফার্ম করেছি। সেই অনুযায়ী আমি রওনা হয়েছি। এখন ফোনে পৌনে একটা বাজে। হঠাৎ এই ফোনে এই মেসেজ দেখলাম।


আমি ঢাকার জাতিসংঘের মিশনের মিনা খানকে ফোন করলাম। বললাম, ঢাকার যা ট্রাফিক, সরাসরি যেতে পারলে পৌঁছাতে পারতাম। কিন্তু তা তো পারব না, দেরি হবে। তিনি বললেন, আমাদের একটু মুশকিল হয়েছে। অসুবিধা নেই। আপনার দেরি হলেও আমি ভেতরে ঢুকিয়ে নেব।


একটা সাসপেন্স তো মনের মধ্যে ছিল। জাতিসংঘের মহাসচিব বলে কথা। নোবেল বিজয়ীদের নিয়েও একটা সাসপেন্স কাজ করত। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসকে দেখতে দেখতে (আর আমি তো তিনি নোবেল পাওয়ার আগে থেকেই তাঁকে দেখছি) ব্যাপারটা কেমন ডালভাতের মতো হয়ে গেছে।


কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিবের ব্যাপার তো তা নয়। আমাকে বলা হয়েছিল, নির্ধারিত ছয়জন মিনিট দুই-তিনেক করে বক্তৃতা করার সুযোগ পাবেন। আপনিও সে রকম একটা বিরল সুযোগের অধিকারী হবেন। ৭৫ বছর বয়সেও একটা থ্রিল কাজ করা শুরু করল আমার মধ্যে। কী ব্যাপারে বলব তাঁর সামনে? নির্দিষ্ট কোনো বিষয় আছে? আমি জানতে চেয়েছিলাম। জবাবে আমাকে বলা হয়েছিল, এই যে আমরা আমাদের দেশে সংস্কার করার চেষ্টা করছি, তার ওপরে বলবেন।



এখন সভা-টভা সব শেষ হয়ে গেছে। আন্তোনিও গুতেরেস তাঁর কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। এখন মনে হয়, এই সভা ডাকা হয়েছিল জাতিসংঘের মহাসচিবকে বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে। এ জন্যই সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যানদের ডাকা হয়েছিল। ডাকা হয়েছিল রাজনৈতিক দলের নেতাদের। তাঁরা সংস্কার নিয়ে কথা বলেছিলেন। কে, কী বলেছিলেন, সেটা আপনারা মিডিয়ার মাধ্যমে আশা করি শুনেছেন। আমি তেমন কিছু বলিনি। কারণ, আমার মনে হয়েছিল, আমাদের সরকার সম্ভবত চায় জাতিসংঘের মহাসচিব আমরা যে গুণগতভাবে গণতন্ত্রকে নির্মাণ করতে চাচ্ছি, তার একটা ধারণা নিয়ে যান।


আমি খারাপ কিছু মনে করছি না। এবার ফ্যাসিবাদের নৃশংসতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘ, বিশেষ করে ফলকার টুর্কের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন যেভাবে শেখ হাসিনার হত্যাযজ্ঞকে উন্মোচিত করেছে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে, তা আমাদের লড়াইকে এক বিশেষ আন্তর্জাতিক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।


জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, গণতন্ত্র নির্মাণে বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রমকে তাঁরা সহায়তা করবেন। এই বক্তৃতা যখন আমি পড়েছি, তখন আমার মনের মধ্যে প্রশ্ন উদয় হয়েছে, কীভাবে তিনি সহায়তা করবেন? সংস্কার করার জন্য তো অনেক টাকাপয়সা লাগবে না। হ্যাঁ, বুদ্ধি-পরামর্শ লাগবে, যাতে সংস্কারটা ঠিকমতো পরিচালনা করা যায়। সুদূর ওয়াশিংটন থেকে গুতেরেস আমাদের কী পরামর্শ দেবেন?


সভা শেষে জাতিসংঘের মহাসচিব যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা এ ক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, আমি সংস্কারকাজে সাহায্য করতে চাই মানে আমি আপনাদের কোনো পরামর্শ দিতে চাই না। সংস্কারের কাজ আপনাদের করতে হবে। কীভাবে করবেন, কখন করবেন—এ সবকিছুর ব্যাপারে আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও