
গণপরিষদের কোনো প্রয়োজন নেই: সালাহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সাত মাস পেরিয়ে গেছে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করতে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা ছাত্ররা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, দ্য ডেইলি স্টারের ওয়াসিম বিন হাবিব ও সাজ্জাদ হোসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দলটির দৃষ্টিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মক্ষমতা, ছাত্রনেতাদের জাতীয় নাগরিক দল গঠন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের অগ্রগতি এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ: প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে নির্বাচনের একটা সময়ের কথা জানিয়েছেন, এ বছর ডিসেম্বর অথবা আগামীবছের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। আপনি কতটুকু আশাবাদী।
সালাহউদ্দিন আহমেদ: প্রধান উপদেষ্টা দুএকটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন তিনি ও তার উপদেষ্টা পরিষদ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাতে আমরা মোটামুটি আশাবাদী যে উনি এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত রোডম্যাপ জাতির সামনে প্রদান করবেন।
বিগত মিটিংয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা কয়েকজন গিয়েছিলাম উনার সঙ্গে কথা বলতে। অন্যান্য বিষয়সহ এই বিষয়টাতে তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরকে সামনে রেখে তাদের সকল প্রস্তুতি চলছে। তবে আমরা আশা করছি তিনি এই বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন যে, তিনি ঠিক ডিসেম্বরের মধ্যে কবে কীভাবে নির্বাচন আয়োজন করাতে চান।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার এবং সাংবিধানিক অথরিটি নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু যেহেতু এই সরকার ঠিক নিয়মিত সরকার নয়, সেজন্যই সরকারের সিদ্ধান্তটা পাওয়ার পরে নির্বাচন কমিশন সেই কাজটা করবে। আর স্বাভাবিক নিয়মে যদি সরকারের মেয়াদ শেষ হতো তখন সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব পালন করত--এখানেই ব্যবধান। আমরা মোটামুটি আশাবাদী যে তিনি খুব শিগগির জাতির সামনে বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবেন।
আপনি বলছেন যে আপনি মোটামুটি আশাবাদী। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কি উদ্যোগ দেখতে পাচ্ছেন?
সালাহউদ্দিন আহমেদ: আমি কয়েকদিন আগেও একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলাম ডিসেম্বরের মধ্যে যে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চাই, সেজন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপগুলো জনগণ দেখতে চায়। সেই হিসাবে তিনি শুধু বলেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে সংলাপ শুরু হয়েছে। এই সংলাপ অবশ্য তাদের নির্ধারিত একটি মেয়াদ আছে। সেই মেয়াদের মধ্যে তারা একটি বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করবেন। সে জন্য কয়েক মাস সময় তারা নিবেন। এটা যদি দৃশ্যমান পদক্ষেপ হয় তাহলে প্রথম বৈঠক হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। তারা আমাদের কাছে রিপোর্টগুলো দিয়েছেন। আমরা সেটার উপরে চর্চা করছি। আশা করি আমাদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকে আমাদের মতামত দিতে পারব। অন্যান্য রাজনৈতিক দল, গণতান্ত্রিক শক্তি, সামাজিক শক্তি বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ তারা হয়তো নেবেন। প্রতিবেদন তৈরির আগে তারা পরামর্শ নিয়েছেন। সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসনসহ পুলিশ এবং অন্যান্য বিষয় যেগুলো বাস্তবায়নযোগ্য নির্বাচনমুখী সংস্কার সেই বিষয়গুলোতে আমরা জোর দিতে বলেছি৷ এবং নির্বাচনের আগে জরুরি ভিত্তিতে কি কি বাস্তবায়ন করা যায় সেগুলো চিহ্নিত করতে বলেছি। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জাতীয় সংসদই প্রয়োজন হবে। যেখানে সেগুলো অ্যাড্রেস করা যাবে, আলোচনা করা যাবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রস্তাবের অনেক কিছুই আমরা ২০২৩ সালে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফাতে বিবৃত করেছি।