
নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন আমাদের কতটা ক্ষতি করছে
নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহার করলে কেবল সেই শব্দই শোনা যায়, যা আপনি এর মাধ্যমে শুনতে চান। ‘নয়েজ’, অর্থাৎ চারপাশের শব্দ তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। আরামসে নিজের চাহিদামাফিক অডিও শুনতে এই হেডফোনের জুড়ি নেই। কিন্তু ক্রমাগত এই সুবিধা গ্রহণ করলে স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই আশঙ্কার ব্যাপারটাই সহজভাবে ব্যাখ্যা করলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
কী ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা
একজন মানুষ দিনের পর দিন যদি লম্বা সময় ধরে নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহার করেন, তাহলে তিনি যখন হেডফোন ছাড়া পৃথিবীর বহু রকম শব্দের মধ্যে থাকেন, তখন মুশকিলে পড়তে পারেন। নানা শব্দের ভিড়ে নিজের প্রয়োজনের শব্দটি আলাদাভাবে বোঝার স্বাভাবিক ক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় অডিটরি প্রসেসিং ডিজঅর্ডার (এপিডি)। উঠতি বয়সে ক্রমাগত এ ধরনের হেডফোন ব্যবহার করলে এই সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, জেন–জির সদস্যদের মধ্যে এপিডি হতে দেখা যাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে উঠতি বয়স থেকেই নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন প্রযুক্তি ক্রমাগত ব্যবহার করার অভ্যাস দায়ী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে যাঁদের মধ্যে নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহারের প্রবণতা কম বা একেবারেই নেই, তাঁদের স্নায়ুতন্ত্র এমনভাবে প্রস্তুত থাকে, যাতে উচ্চশব্দের মধ্যেও অপ্রয়োজনীয় শব্দ ফিল্টার করে ফেলতে পারেন।
জীবনধারা যেভাবে ব্যাহত হতে পারে
এপিডিতে ভুগলে ক্লাসে মনোযোগ দিতে অসুবিধায় পড়তে পারেন তরুণেরা। কারণ, ক্লাসের নানা রকম শব্দের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় শব্দগুলো তাঁর স্নায়ুতন্ত্র আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে না। এর মানে, তিনি সবই শুনছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই ঠিকভাবে শুনছেন না। এ রকম পরিস্থিতিতে কোনো কথা বুঝতে তাঁর বেশ কষ্ট হয়। তাঁর কানে প্রবেশ করা সব শব্দই স্নায়ুতন্ত্র গ্রহণ করতে উদ্যত হয়। কিন্তু মস্তিষ্ক এত ধরনের শব্দের মধ্য থেকে অর্থপূর্ণ তেমন কিছুই আর বের করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে কিন্তু তাঁর কানের ক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই। কেবল স্নায়ুতন্ত্র প্রয়োজনীয় শব্দ ফিল্টার করতে না পারার সমস্যার জন্যই তিনি ভুক্তভোগী। ধরুন, তিনি সিনেমা হল কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় নিজের মাতৃভাষারই কোনো সিনেমা দেখছেন। তবু তাঁর সাবটাইটেলের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ, চারপাশের নানা শব্দের ভিড়ে তিনি সিনেমার সংলাপ ঠিকঠাক বুঝতে পারেন না। অনেক মানুষের ভিড়ে কিংবা অনেক ধরনের যান্ত্রিক শব্দের মধ্যে এমন সমস্যা হতেই পারে তাঁর। অনেক ধরনের শব্দের মধ্যে অস্থিরতায়ও ভুগতে পারেন তিনি।
- ট্যাগ:
- স্বাস্থ্য
- বিশেষ হেডফোন
- স্বাস্থ্য ঝুঁকি