সংস্কারের জন্য টাস্কফোর্সের সুপারিশগুলো কেন গুরুত্বপূর্ণ

প্রথম আলো কল্লোল মোস্তফা প্রকাশিত: ১১ মার্চ ২০২৫, ১৬:৫২

গত দেড় দশকে দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানার আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে বেশি ধনী ১০ শতাংশ মানুষের হাতে এখন দেশের মোট আয়ের ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয় দেশের মোট আয়ের মাত্র ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। আয়বৈষম্যের চেয়েও ভয়াবহ সম্পদের বৈষম্য। ধনী ১০ শতাংশের হাতে সম্পদের ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশ পুঞ্জীভূত আর নিচের দিকের ৫০ শতাংশের হাতে আছে মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ সম্পদ।


এই ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে সামাজিক নিরাপত্তা খাত। কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল এবং যতটুকু বরাদ্দ হয়, তারও একটা বড় অংশ প্রকৃতপক্ষে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছায় না। মোট বরাদ্দ বেশি দেখানোর কৌশল হিসেবে এ খাতে এমন কিছু কর্মসূচি দেখানো হয়, যা বাস্তবে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিই নয়। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় খুব কমসংখ্যক দরিদ্রই সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পায়, আর যা–ও বা পায়, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। সেটাও আবার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় না করার কারণে প্রতিবছর প্রকৃত অর্থে কমতে থাকে।


সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির এই সীমাবদ্ধতাগুলো দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হলেও বিগত সরকারের আমলে এগুলোর কোনো সুরাহা করা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ–সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের রিপোর্টে এই সীমাবদ্ধতাগুলো উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো সুপারিশও করা হয়েছে।



গত ৩০ জানুয়ারি টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। যদিও বিদ্যমান প্রবল অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। এখানে টাস্কফোর্সের রিপোর্টে উঠে আসা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সীমাবদ্ধতা ও সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো—


সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সমস্যা


টাস্কফোর্স হিসাব করে দেখিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের কর্মসূচিগুলোর বরাদ্দ এত কম যে তা মাথাপিছু জাতীয় আয়ের মাত্র ২ থেকে ৫ শতাংশ এবং জাতীয় দারিদ্র্যসীমার তুলনায় অনেক কম। যেমন মাসিক বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা জাতীয় দারিদ্র্যসীমার আয়ের ১৪ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ভাতা দারিদ্র্যসীমার আয়ের ২২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় না করার কারণে প্রতিবছর যা জাতীয় আয়ের তুলনায় আরও কমতে থাকে।


সামাজিক নিরাপত্তা খাত হিসেবে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়, এ রকম ছয়টি খাতের মধ্যে পাঁচটিই প্রকৃত অর্থে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নয়। এ রকম কয়েকটি খাত হলো সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, কৃষি খাতে ভর্তুকি, সঞ্চয়পত্রের সুদ, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ ইত্যাদি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এ বরাদ্দের ৩৩ শতাংশই করা হয়েছে পেনশন ও সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধ বাবদ।


সরকারি হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ১৭ শতাংশ। টাস্কফোর্স দেখিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন খাতের বরাদ্দ বাদ দিলে প্রকৃত বরাদ্দ দাঁড়ায় জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ ও জাতীয় বাজেটের ৭ শতাংশ। আইএলওর (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) হিসাবে এই হার আরও কম, জিডিপির শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। বরাদ্দের এই হার বিশ্বের নিম্নমধ্যম আয় (৪.২%) ও উচ্চমধ্যম আয়ের (৮.৫%) দেশ তো বটেই, এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার গড় বরাদ্দের (৩.৮%) হারের চেয়েও অনেক কম।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও