
সহিংস জনজোট : বিচার কোথায়
জোটবদ্ধ সহিংসতা কিছুতেই থামছে না। একের পর এক ঘটেই চলছে মব সহিংসতা। দিনে-দুপুরে রাস্তাঘাট, শিক্ষাঙ্গনসহ যেখানে সেখানে মব জাস্টিস চলছে। গভীর রাতেও বাসাবাড়িতে জোটবদ্ধ আক্রমণ হচ্ছে। শিক্ষার্থী, নারী, বিভিন্ন পেশার মানুষ, বিদেশি নাগরিক, এমনকি পুলিশ পর্যন্ত মব সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এতে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন, আহত হচ্ছেন, অপদস্থ হচ্ছেন। ‘মব’ শব্দটি এখন জনজীবনে রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে বিরাজ করছে। মনে হয় লোকজন জোটবদ্ধ হয়ে কোথাও ওঁৎ পেতে আছে, এই বুঝি আক্রমণ চালাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও অনেকটা অসহায় মনে হচ্ছে।
তিনি এ ব্যাপারে জনগণের সহযোগিতা চেয়ে বলেছেন, ‘জনগণ উচ্ছৃঙ্খল হলে বাহিনী দিয়ে থামানো যায় না।’ মব সহিংসতা অনেকটা বেড়েছে, গত কয়েকদিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে তার কিছু নমুনা পাওয়া যাবে। প্রাসঙ্গিক হওয়ায় এখানে সে সব ঘটনার উল্লেখ করা প্রয়োজন। গত ৪ মার্চ রাতে একদল লোক জোটবদ্ধ হয়ে গুলশানের একটি বাসায় জোর করে ঢুকে ভাঙচুর, তছনছ ও লুটপাট করে। মব হামলার নেতৃত্ব দেওয়া লোকজনের দাবি, বাড়িটি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের। বাড়িটিতে বিপুল অর্থ, অবৈধ অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে, বাড়িটির মালিক এখন অন্য এক ব্যক্তি। ২০০১ সালে তানভীরের বিয়েবিচ্ছেদ হয়ে যায়। তল্লাশি চালালে ২০০-৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে লুটপাটের উদ্দেশ্য নিয়ে মব হানা দেয় ওই বাসায়। দীর্ঘ সময় ধরে তারা তা-ব চালায়। হামলাকারীরা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলকে খবর দিয়ে এনে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। ঘটনার অনেক পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী হাজির হয়। তাদের সামনে দিয়েই হামলাকারীরা চলে যায়। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে পরে ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।