
জিডিপিতে নেই গৃহকর্মের হিসাব
পরিবারের আর সবার ঘুম ভাঙার আগেই জেগে উঠেন ইয়াসমিন আরা। ৪৫ বছর বয়সী এই নারী যখনই ঘুমাতে যান না কেন, উঠতে হয় খুব ভোরে।
ঘুম থেকে উঠে তিনি সবার জন্য নাস্তা তৈরি করেন। তিন সন্তানকে দুপুরের খাবার তৈরি করে দিতে হয়। ওরা ক্লাসে চলে গেলেও ইয়াসমিনের কাজ চলতে থাকে। ঘর-দোর ও বাসন-কোসন পরিষ্কারের কাজ, কাপড় ধোয়া, পরের বেলার খাবার তৈরির পরিকল্পনা ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি।
এতেই কী কাজ শেষ? বাড়ির সবার যত্ন, রান্না, সন্তানদের পড়ালেখা, ঘর সামলানো—সবই দেখভাল করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ইয়াসমিন যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন তা ম্লান হয়ে গেছে। এখন তাকে দিতে হচ্ছে ঘর-সংসার পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয়।
ঘরের কাজ শেষ করতে তার অনেক রাত হয়ে যায়। নেই যথাযথ বিশ্রাম, বেতনের বালাই নেই। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। এত কাজ-ক্লান্তির পরও তিনি 'বেকার গৃহিণী'। শুনতে হয় 'কিছুই করে না' জাতীয় মন্তব্য।
ইয়াসমিন বলেন, 'অর্থনীতিতে ডিগ্রি নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলাম ব্যাংকে চাকরি করব। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হব। যখনই চাকরির কথা ভাবি তখনই শুনতে হয় ঘরে আমাকে বেশি প্রয়োজন।'