প্রায়শই দেরি করে অফিস পৌঁছোনোর জন্য ‘কুম্ভকর্ণ’ তকমা জুটেছিল এক সময়ে। ভেবেছিলেন, কাজ থেকে অবসর নেওয়ার পর বিছানায় পড়ে পড়ে শুধু ঘুমোবেন। কিন্তু সে গুড়ে বালি! কিছুতেই দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। মধ্যরাতে যদিও বা একটু তন্দ্রা এল, পাখি ডাকার আগেই তা ভেঙে যায়। ট্রেন ধরার তাড়া নেই। ঠিক সময়ে মেশিনে আঙুলের ছাপ না দিলে বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়ার অদৃশ্য আতঙ্কও নেই! তা হলে ঘুম আসছে না কেন? তা হলে এখন থেকেই ঘুমের ওষুধের উপর নির্ভর করতে হবে? সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত শারীরিক কসরত করলে প্রবীণেরাও এই ধরনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। প্রশিক্ষকের পরামর্শমতো স্ট্রেন্থ ট্রেনিং করলে বিশেষ উপকার মিলতে পারে।
‘ফ্যামিলি মেডিসিন অ্যান্ড কমিউনিটি হেল্থ জার্নাল’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের পরিমাণ কমে আসা স্বাভাবিক। কারণ, অবসর জীবন অনেকের কাছেই বেশ নিশ্চিন্তির। তা ছাড়া এই সময়ে খুব বেশি দৌড়ঝাঁপও করতে হয় না। সাধারণ কিছু ব্যায়াম, যোগাসন কিংবা শারীরিক কসরত করতেও অনীহা বোধ করেন অনেকে। তাই বয়স বাড়লে অনিদ্রাজনিত সমস্যা দেখা দিতেই পারে। কম ঘুমোলে শরীরে ম্যাজমেজে ভাব, অবসাদ এবং উদ্বেগ সংক্রান্ত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই সমীক্ষায় ২১০০ জন প্রবীণ অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২৫টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়ে গবেষকেরা দেখেছেন, ঘুমের চক্র স্বাভাবিক রাখতে প্রবীণদের ক্ষেত্রে শরীরচর্চার অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে স্ট্রেন্থ ট্রেনিং কিংবা অ্যারোবিক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করতে শরীরচর্চার কোন পদ্ধতির প্রভাব কেমন, তা বুঝতে অ্যারোবিক, স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, ব্যালান্স ধরে রাখার ব্যায়াম, ফ্লেক্সিবিলিটি এবং মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ এক্সসারসাইজ়ের মতো পাঁচটি ধরনকে বেছে নিয়েছিলেন গবেষকেরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘুমের ক্ষেত্রে স্ট্রেন্থ ট্রেনিং, অ্যারোবিক এবং মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ এক্সসারসাইজ়ের প্রভাব ভালই। তবে গবেষকেরা বলছেন, অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে তালিকায় বেশ উঁচুর দিকে রয়েছে স্ট্রেন্থ ট্রেনিং।