ড. সাজ্জাদ জহির, অলাভজনক বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) নির্বাহী পরিচালক। এর আগে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন বিশ্বব্যাংক, আইএফসি, আইএফএডি, ইউনিসেফ, এফএও ও ডব্লিউএফপির মতো প্রতিষ্ঠানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে পিএইচডি করেছেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে। দ্বৈত নাগরিকত্ব ও অর্থ পাচারসহ নানা প্রশ্ন নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন বণিক বার্তায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাবিদিন ইব্রাহিম
বাংলাদেশে অনেক শিল্পপতি ও ঋণখেলাপি বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। এমনকি সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও অনেকে এক বা একাধিক দেশের নাগরিক হয়েছেন। এটি রাজনীতি ও অর্থনীতির জন্য কী ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে? আমরা কীভাবে এটি প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি?
এটি জাতীয় পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেখানে দ্বৈত নাগরিকত্ব, অর্থ পাচার ও বিদেশী নাগরিকত্ব গ্রহণের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। প্রশ্ন জাগে, এসব ব্যক্তি প্রথমে অর্থ পাচার করে তারপর নাগরিকত্ব নিয়েছে? নাকি পূর্ব থেকে নাগরিকত্ব থাকায় অর্থ পাচার করতে সুবিধা হয়েছে?
সাধারণভাবে দেখা যায়, বিদেশী নাগরিকত্ব থাকলে অনেক ক্ষেত্রে অর্থ বিদেশে পাচার করা সহজ। কারণ পাচার করা অর্থ অবৈধভাবে গেলেও গন্তব্য দেশে আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত থাকায় সেই দেশে অতীতে বৈধতা পেতে দেখা গেছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকিং ব্যবস্থা এড়িয়ে বিদেশের বসতিরা নগদ অর্থ দৈনন্দিন খরচে ব্যবহার করতে পারেন। শুধু অর্থ পাচার নয়, দ্বৈত নাগরিকদের হাতে অন্য দেশের পাসপোর্ট থাকায় রাজনৈতিক বা সামাজিক অপকর্মের পর তাদের অনেকেই সহজে দেশ ছাড়তে পেরেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি, কীভাবে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি দ্রুত দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। যেমন ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কিছু ব্যবসায়ী কানাডা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব নিয়েছেন অথবা দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার ফলে বিচার এড়ানোর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব ত্যাজ্য করেছে। বণিক বার্তার বরাতে জানা যায় যে প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীরা কেবল বৈধ প্রক্রিয়ায় টাকা উপার্জন করলেও কিছু অসাধু ব্যক্তি এ প্রবাসী পরিচয়ের আড়ালে রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার করছে।