দেশকে চার প্রদেশে বিভক্ত করার প্রস্তাব কতটা যৌক্তিক

প্রথম আলো ড. গোলাম রসুল প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১৬:১২

অন্তর্বর্তী সরকার গত অক্টোবর মাসে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল। এই কমিশন গঠনের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছিল, জনপ্রশাসনকে জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে সুপারিশ পেশ করা। এ কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে পেশ করে।


এই প্রতিবেদনের পরিসর অনেক ব্যাপক। ১৪টি বিভিন্ন শিরোনামে প্রায় ২০০ সুপারিশ পেশ করেছে, যা মোট ১৭টি অধ্যায়ে বিস্তৃত। প্রতিবেদনটি সুলিখিত ও সুবিন্যস্ত। বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সুপারিশগুলোকে প্রাধিকার ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।


জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের একটি অন্যতম সুপারিশ হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোর পরিবর্তন; এককেন্দ্রিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থা তথা প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা চালু করা। দেশের পুরোনো চারটি বিভাগ যথা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ নিয়ে চারটি প্রদেশ এবং রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্রশাসিত একটি ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ গঠন।


প্রস্তাব অনুসারে, প্রতিটি প্রদেশের নিজস্ব আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগ থাকবে এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চ থাকবে।


কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, স্বরাষ্ট্র ও সীমান্ত নীতি, অর্থ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ, রেলওয়ে, মহাসড়ক, বিমান ও সমুদ্রবন্দর, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বিজ্ঞান ও পারমাণবিক শক্তি থাকবে। এগুলো ছাড়া অন্য সব বিষয় প্রাদেশিক সরকারের হাতে ন্যস্ত হবে। কোনো কোনো বিষয়ে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার উভয়েরই ভূমিকা থাকবে, যেমন উচ্চশিক্ষা ও স্বাস্থ্যনীতি।



বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর থেকে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা প্রচলিত। হঠাৎ করে শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন অর্থাৎ এককেন্দ্রিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় রূপান্তর একটি জটিল বিষয়। এর সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। যদিও এই সুপারিশগুলো এখন কেবল প্রস্তাব হিসেবে রয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে। তথাপি এই সুপারিশগুলো সংলাপের মূল ভিত্তি এবং ঐক্যমত গঠনের পাথেয় হিসেবে কাজ করবে। তাই এই সুপারিশমালাগুলোর পর্যালোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।


প্রথমেই দেখা যাক, যুক্তরাষ্ট্রীয় (ফেডারেলিজম) শাসনব্যবস্থা কী এবং এই শাসনব্যবস্থা কখন কাম্য বা কখন কাম্য নয়। ফেডারেলিজম হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে সরকারের মধ্যে বিভিন্ন স্তর বা কাঠামো থাকে এবং বিভিন্ন স্তরের মধ্যে সাংবিধানিকভাবে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা সুনির্দিষ্টভাবে ভাগ করা থাকে। একটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় বা জাতীয় স্তর অন্যটি হলো প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক স্তর। এই শাসনব্যস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—সরকারের প্রতিটি স্তরে আইনসভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের কাঠামো ও প্রতিষ্ঠান থাকে।


ফেডারেলিজমের একটি সুবিধা হচ্ছে এই যে এই ব্যবস্থায় ক্ষমতা বিভিন্ন স্তরে ভাগাভাগি হয় বলে এটা ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহারকে কেন্দ্রীভূত করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, ফেডারেলিজম যদিও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে সহায়ক, তবু এই শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল। এটি সরকারি নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জটিল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এবং বাস্তবায়নের গতি মন্থর করে দিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন স্তর কিংবা অঞ্চল বা প্রদেশের মধ্যে সংঘাত ও বিরোধের সৃষ্টি করতে পারে কিংবা বিদ্যমান বিরোধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও