
প্রত্যাশার পারদ আকাশচুম্বী
বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রয়োজনীয়তা এ সময়ের অনিবার্য এক প্রপঞ্চ। কেননা স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তৃত্ববাদী ও নিজস্বতার বয়ান রাষ্ট্রকে কোনোভাবেই একটি জনরাষ্ট্র হয়ে উঠতে দেয়নি। বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মের আওয়ামী লীগের বিগত পনেরো বছরের ‘নন-পার্টি পলিটিক্যাল সিস্টেম’ তথা রাজনীতির বিরাজনীতিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলস্বরূপ অকার্যকর একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয় বাংলাদেশ। সংবিধানের একব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতাকাঠামোয় ভর করে দুঃশাসনের এক কর্তৃত্ববাদী রাজত্ব তৈরি করেছিল আওয়ামী লীগ। বলাই বাহুল্য, জুলাই জনঅভ্যুত্থান কর্তৃত্ববাদী শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে মুক্তি দিয়েছে বাংলাদেশকে। যে দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে শেষ পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আস্থা রাখেনি দেশের আপামর মানুষ। বরং আস্থা রেখেছে তরুণ ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে।
যে নেতৃত্ব শুধু শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে মুক্তিতেই থেমে থাকেনি, একই সঙ্গে সম্মিলিত দাবি করেছে, সাংবিধানিক একব্যক্তিকেন্দ্রিক রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের। এই লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার নেতৃত্বের প্রভাবে গঠিত হয়েছে একটি অন্তর্বর্তী সরকার। যারা রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি প্রণয়ন করছে রাষ্ট্র সংস্কারের যাবতীয় জনবান্ধব সুপারিশ। এরই মধ্যে জুলাই জনঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা বিশেষ করে ছাত্র-যুবরা নিজেদের প্রকাশ করেছে একটি রাজনৈতিক দলের অবয়বে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আত্মপ্রকাশ করে ছাত্র-যুবদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। ঘোষণা করেছে পরিবারতন্ত্রের বাইরে গিয়ে নতুন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থার। যাকে তারা বলছেন ‘বাংলাদেশ পন্থা’। অঙ্গীকার করেছে রাষ্ট্রের যাবতীয় জনবিরুদ্ধতার অবসান ঘটিয়ে কাক্সিক্ষত সংস্কার করার মধ্য দিয়ে নতুন এক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের। যা আজ অনিবার্য এক প্রপঞ্চে পরিণত হয়েছে বিশেষ করে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- রাজনৈতিক পদক্ষেপ
- প্রত্যাশা