শিক্ষা বাঁচাতে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে

যুগান্তর আবু আহমেদ প্রকাশিত: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১২

ভাবতে কষ্ট হয় আমাদের দেশের অধিকাংশ শিক্ষক ইংরেজি জানেন না। তাদের ইংরেজি কোনো প্রকাশনাও নেই। এ ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথাও নেই। তাদের মাথাব্যথা হলো প্রশাসনিক পদে বসার জন্য।


প্রশাসনিক বড় বড় পদে বসার জন্য তাদের তদবিরের অভাব নেই। বলতে দুঃখ লাগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপাচার্য হওয়ার জন্য সচিবালয়ে গিয়ে ঘুরঘুর করেন। পদ-পদবির জন্য রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে। কারণ পদ-পদবি পেলে তারা তাদের নামের আগে-পিছে কিছু লিখতে পারবেন এবং কিছু পয়সা বেশি পাবেন ইত্যাদি।


পদ-পদবির নেশায় শিক্ষকরা অন্ধ হয়ে গেছেন। নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে গেছে তাদের মধ্য থেকে। দুর্নীতির কথা কী আর বলব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক উপাচার্য কী পরিমাণ দুর্নীতি করেছিলেন, তা কারও অজানা নয়। তিনি ঢাকঢোল পিটিয়েই দুর্নীতি করেছেন। অনেকে দুর্নীতি করে তাদের চেয়ার টিকিয়ে রেখেছেন, অনেকে উচ্চপদে আসীন হয়েছেন। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি ঢুকে যাওয়ার কারণে এসব যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।


দুর্নীতির নৌকায় ভর করে অনেক শিক্ষকই প্রশাসনের সঙ্গে একটা সম্পর্ক দাঁড় করিয়েছেন। এসব থেকে পয়সাপাতি উপরের লেভেলেও যেত। এভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য হওয়া, উপ-উপাচার্য হওয়া একটা তদবিরের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। এখানে মেরিটের কোনো ব্যাপার নেই, রাজনৈতিক তাঁবেদারিই সব।



উপাচার্যের মতো পদে যে একজন স্কলার লোকের প্রয়োজন, এ ধারণাটি বিদায় নিয়েছিল গত ১৫ বছরে। আমার জানামতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসাবে স্কলার লোকদের পদায়ন ২০০৬-০৭ সালের আগেই শেষ হয়ে গেছে। এর আগে এ পদগুলোতে মোটামুটি কিছুটা স্কলার লোক দেখা যেত। এরপর থেকে তেমনটি আর দেখা যায়নি। রাজনীতি, দলীয় চাটুকারিতাই হয়ে গেছে উপাচার্য হওয়ার জন্য প্রধান নিয়ামক, ফ্যাক্টর বা অনুঘটক।


শিক্ষাঙ্গনের এ অধঃপতন থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় থেকে শিক্ষায় পরিবর্তন আনতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কিছুটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। যেমন চলমান শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ‘সৃজনশীল’ ফেলে দিয়ে আগের ফরমেটে ফেরত এনেছে। এটা অবশ্যই উপকার দেবে। কিন্তু গত পাঁচ-ছয় বছর তো আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেছে। সেটা তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। যা হোক, আমরা চেষ্টা করলে শিক্ষাঙ্গন তার আগের চেহারায় ফিরে যেতে পারবে।


আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সিনেটের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগ, এটা হয়তো এখন আর অতটা কাজ করবে না। কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় নিয়োগ, এটা নাকি করা হয়েছিল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য। বিষয়টি হাস্যকরই বটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রিক্রুট না করে ভোটার রিক্রুট করা হতো। ৫০ নম্বরের মেরিটে থাকা ব্যক্তি শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেতেন।


অথচ মেধাবীরা ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড হয়েও বাদ পড়েছেন। কারণ এখানে ভোটের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাধান্য পেয়েছে, মেধার ভিত্তিতে নয়। ’৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী যারা এটা করেছিল, ওটার উদ্দেশ্য হয়তো ভালো ছিল। কারণ স্কলারদের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটা চর্চা হতো। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চার এ মহৎ উদ্দেশ্য কাজ করেনি এদেশে। আমার কাছে মনে হয় এ অর্ডিন্যান্সে পরিবর্তন আনতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্রদের যেমন রাজনীতি সীমিত করে দেওয়া উচিত, তেমনি শিক্ষকদের রাজনীতিও সীমিত করে দেওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও