এটিএম আজহারুলের মামলায় তাজুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন

প্রথম আলো মনজুরুল ইসলাম প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৩৭

বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে একটি ‘অভূতপূর্ব’ ঘটনা ঘটছে। ঘটনাটি ঘটছে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের করা রিভিউ আবেদনের শুনানিকে কেন্দ্র করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে আজহারুলের মুক্তির দাবির মধ্যে এ ঘটনা নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক তৈরি করেছে। 


২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজহারুলের করা রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। রিভিউ আবেদন শুনানির বিষয়টি উত্থাপন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। (প্রথম আলো অনলাইন, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)


মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আজহারুলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলাকালে তাঁর পক্ষের আইনজীবী ছিলেন তাজুল ইসলাম। গত ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার তাজুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেয়। এর ফলে আজহারুলের বিরুদ্ধে মামলায় তাজুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা ‘স্বার্থের সংঘাত’ (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট) তৈরি করেছে কি না এবং তিনি পেশাগত আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না—এমন প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক আইনজীবী।


সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি মামলায় একজন আইনজীবী কখনো পক্ষ পরিবর্তন করতে পারেন না। অর্থাৎ কখনো বিবাদীর পক্ষে থাকলে আবার পরে বিবাদীর বিপক্ষে যেতে পারেন না। রাষ্ট্রপক্ষ বা কোনো ট্রাইব্যুনালের আইনজীবীর ক্ষেত্রেও এটা একইভাবে প্রযোজ্য।’


শাহদীন মালিক আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলো খুবই স্পর্শকাতর। তাই এ মামলায় আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন ছিল। আজহারুলের মামলার ক্ষেত্রে কোনো আইনজীবী পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচারবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা বার কাউন্সিলের যাচাই-বাছাই করে দেখা উচিত।’ 



‘অভিভাবক সংস্থা’ হিসেবে আইনজীবীদের পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচার বিধিমালার দ্বিতীয় অধ্যায়ের (মক্কেলের প্রতি আচরণ) ২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান মক্কেল কিংবা পুরাতন মক্কেলের মামলা পরিচালনাকালে একজন আইনজীবী যদি মামলা-সংক্রান্ত কোনো গোপনীয় তথ্যাদি সম্বন্ধে অবগত হইয়া থাকেন, তবে উক্ত আইনজীবী উক্ত তথ্য নির্ভর কোনো মামলায় উক্ত মক্কেলের বিপক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিয়োজিত হইতে পারিবেন না।...’


একই অধ্যায়ের ৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একজন আইনজীবী পরস্পরবিরোধী কোনো ব্যাপারে কোনো মক্কেলের প্রতিনিধিত্ব করিতে পারিবেন না।’  


লক্ষণীয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাগুলোর বাদী হিসেবে থাকেন চিফ প্রসিকিউটর। এ কারণে আজহারুলের রিভিউ শুনানিতে তাজুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ না করলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি এখন এই মামলার বাদী। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে মামলাগুলোতে তিনি বিবাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন, চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি হয়ে গেছেন বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী।


আজহারুলের মামলায় তাজুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা একটি ‘অভূতপূর্ব’ পরিস্থিতি তৈরি করেছে এবং তা বার কাউন্সিলের পেশাগত আচরণ ও শিষ্টাচারবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি প্রথম আলোকে
বলেন, যে বা যাঁরা আগে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, তাঁদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় বিষয়টি নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে। তাঁদের এই নিয়োগ নৈতিকভাবে সঠিক হবে কি না কিংবা ‘স্বার্থের সংঘাত’ তৈরি করবে কি না, অন্তর্বর্তী সরকারের আগেই তা বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও